চাঁদপুরের শাহরাস্তির শিক্ষক কর্তৃক ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির ধর্ষিত শিশুকে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ) বেলা ১২ টায় হাসপাতালে দেখতে গেলেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপি এম।
তিনি আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে গিয়ে ধর্ষিত শিশুর শয্যা পাশে গিয়ে তার চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন ও ঘটনার সম্পর্কে জানেন।
এসময় পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, ‘বর্তমান সময়ে দেখা যায় অভিভাবকরা শিশুদের প্রতি ততোটা গুরত্বসহকারে খোঁজ খবর রাখছেন না। যাদের ১৫-১৬ বছর মেয়ে রয়েছে তারা তাদের প্রতিই বেশি নজর রাখছেন। শিশুদের প্রতি অভিভাকদের গুরুত্ব কম থাকায় এসব অপরাধীরা শিশুদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সাথে এসব ঘটনা ঘটাতে সুযোগ পায়। এ জন্য প্রত্যেক অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি আরো যতœবান ও সচেতন হতে হবে। ’
তিনি আরো বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ওইদিনই শিশুটিকে চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে পাঠিয়েছি এবং সেদিনই আমরা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে আদালতে সোর্পদ কারার পর সে ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করেছে। তাকে আইনের আওতায় রেখে আমরাও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে করে ভবিষ্যতে আর কোনো লোক এমন ঘটনা না ঘটাতে পারে।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.ওয়ালী উল্ল্যাহ অলি, শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান,এস আই মো.বাছির আলমসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৩১ জুলাই ) দুপুরে শাহরাস্তি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাত্ত্বলা গ্রামের বাত্ত্বলা আলীমুল কোরআন নুরানী মাদ্রাসার অফিস কক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষক ওহিদুজ্জামান (৩০) মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
ওই ছাত্রীর মা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় ওইদিন তার মেয়ে সকাল ৯ টার পূর্বেই মাদ্রাসায় যায়। ঘটনার দিন মাদ্রাসায় আরবি পরীক্ষা ছিল। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পযন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে ওই ছাএী সকল শিক্ষার্থীর সাথে বাড়িতে রওনা হলে মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে মাদ্রাসায় থাকার জন্যে বলে।
ছাএীটি বেলা ২ টায় মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে যায়। এরপর শিশুটি ভয়ে এ ঘটনা কাউকে জানায়নি। দুপুরের পর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বড় বোন তার কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পারে। সন্ধ্যায় তার মা তাকে শাহরাস্তি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে।
সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চাঁদপুর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে শিশুর মা বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর শাহরাস্তি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ওহিদুজ্জামান দীপুকে আটক করে।
অভিযুক্ত ওহিদুজ্জামান দীপু পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। স্থানীয়রা জানান,ওহিদুজ্জামান গত বছর বাও¦লা মিয়াজী বাড়ি জামে মসজিদে মোয়জ্জেন হিসেবে যোগদান করেন । এরপর তিনি বাত্ত্বলা আলীমূল কোরআন নুরানী মাদ্রাসায় শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়।
মাদ্রাসাটিতে তিনিই একমাত্র শিক্ষক। ওহিদুজ্জামান বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার চর আটজুড়ি গ্রামের বাশার মোল্লার ছেলে। ওহিদুজ্জামান বাত্ত্বলা গ্রামের মিয়াজী বাড়ির হুমায়ূনের ঘরে পরিবার সহকারে বসবাস করে আসছেন। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকেলে তাকে চাঁদপুর আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৯:১৫ পিএম, ৩ আগস্ট ২০১৭,বৃহস্পতিবার
এজি