শাহরাস্তি

শাহরাস্তিতে জীবন সংগ্রামে ছুটে চলা রায়হানের গল্প

শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের বেততোলা গ্রামের মৃতঃ আঃ রবের পুত্র মোঃ রায়হান (২৮)। পিতা গত হয়েছেন ১৫ বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে অকুল পাথারে পড়েন রায়হানের মা রাহেনা বেগম।

পৈত্রিক ভাবে মাথা গোঁজার মত সামান্য সম্পত্তি রেখে গেছেন রায়হানের পিতা। সেখান থেকেই শুরু তাদের জীবন সংগ্রাম। স্থানীয় একটি টিভি-ফ্রিজের শোরুমে চাকরি করে কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরে রায়হান।কাছের বলতে একমাত্র চাচা মোঃ কামাল হোসেন খোকন ছিলেন নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। মৃত বড় ভাইয়ের পরিবার বা সন্তানদের দেখভাল করার ফুসরৎ মিলেনি তার।

সারা দিনের গাধা খাটুনী শেষে নিজ ও ৪ বোনের পড়াশুনা ঠিকই ধরে রেখেছিলেন রায়হান। নিজের শ্রম ও কষ্টলব্দ অর্থ খরচা করে পাত্রস্থ করেছেন সবাইকে। বর্তমানে দাদী, মা, এক শিশু পুত্র ও স্ত্রী মিলে রায়হানের সংসার। রায়হানের নিদারুণ দুর্দশা ও কষ্ট দেখে হু হু করে কাঁদতেন দাদী আছিয়া বেগম। নাতীর অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে ২০১৯ সালে স্বামীর সম্পদ হতে প্রাপ্ত ৯.৮৭ শতাংশ জমি মধ্যে ৯.৫০ শতাংশ জমি দান করে দেন রায়হানকে। আস্তে আস্তে সংসারের চাকা সচল হতে থাকলো। পরিশ্রম ও অন্তরিকতা থাকলে কোন বাধাই পিছে ঠেলে দিতে পারে না। এবার নিজের কষ্টার্জিত অর্থে কিনে নেন নিজ ফুফু পেয়ারা বেগমের কাছ হতে ৪.৫০ শতাংশ জায়গা। আর এতেই বাধ সাধেন চাচা মোঃ কামাল হোসেন খোকন।

রায়হান জানায়, আমাদের অসহায় অবস্থার সময় যিনি পাশে দাঁড়াতে পারেন নি, বোনদের নিয়ে নিদারুণ কষ্টে অতিবাহিত করা দিনগুলোতে বাড়াতে পারেন নি সহমর্মিতার হাত, আজ তিনি আমার কেনা ও দাদীর কাছ হতে উপহার পাওয়া জমি দখল করতে হুমকী ধমকী দিয়ে যাচ্ছেন। আমাকে জমি দেয়ায় দাদী ও ফুফুর সাথে প্রতিনিয়ত দূর্ব্যবহার করে যাচ্ছেন। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

রায়হানের ফুফু পেয়ারা বেগম জানান, আমি ভাইয়ের এতিম ছেলের কাছে জমি রেজিস্ট্রি দেয়ায় আমার ভাই মোঃ কামাল হোসেন খোকন খুব দূর্ব্যবহার ও হুমকী ধমকি দিচ্ছে।

রায়হানের দাদী আছিয়া বেগম জানান, আমি নাতিকে জমি দান করায় আমার পুত্র মোঃ কামাল হোসেন খোকন আমাকে হুমকি ধমকি ও খারাপ ব্যবহার করছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ কামাল হোসেন খোকনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ পাওয়া যায় নি।

শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবদুল মান্নান জানান, এ ব্যপারে কোন অভিযোগ পাইনি। কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শাহরাস্তি প্রতিনিধি,১১ মার্চ ২০২১

Share