Home / উপজেলা সংবাদ / শাহরাস্তি / শাহরাস্তিতে গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে পালাল এনজিও
Shahrasti-02

শাহরাস্তিতে গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে পালাল এনজিও

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে অভিনব উপায়ে মানুষজনের কাছ থেকে কোটি টাকা ভাগিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে অগ্রগতি সংস্থা নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বিষয়টি জানতে পারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের সামনে ভিড় করেন। পরে তাঁরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

এলাকাবাসী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উপলতা এলাকার একটি বাড়ির কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে চলতি মাসের শুরুতে কার্যক্রম শুরু করে অগ্রগতি। বাড়িটির মালিক জাকির হোসেন ও এনায়েত হোসেন সম্পর্কে ভায়রা। তাঁদের সঙ্গে মাসিক ২২ হাজার টাকা ভাড়ার চুক্তিনামায় সই করেন মো. হানিফ নামের এক ব্যক্তি। তিনি লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ গ্রামের বশির উল্লার ছেলে। হানিফ নিজেকে অগ্রগতি সংস্থার ‘এরিয়া ম্যানেজার’ হিসেবে পরিচয় দেন। (খবর প্রথম আলো)

বাড়ির মালিক এনায়েত হোসেন বলেন, চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে এই বাড়ি ভাড়া কার্যকর হয়। এনজিওটি এখানে ওঠার পর মাঠপর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করে। তাঁরা লোকজনকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখাতে শুরু করেন। বলেন, ৫০ হাজার, ১ লাখ, দেড় লাখ, ২ লাখ ও ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। তবে ঋণ পাওয়ার গ্রাহককে উল্লিখিত টাকার ১০ শতাংশ হিসেবে ‘জামানত’ জমা দিতে হবে।

ভোলদিঘি গ্রামের সাবিকুন্নাহার নিপা মনি ৫ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা পেতে ৫০ হাজার টাকা জামানত জমা দিয়েছেন। পূর্ব উপলতার নাজমা আক্তারও ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া কাজীরকাপ গ্রামের স্বপ্না ১০ হাজার ৪০০, ভোলদিঘির রেজিয়া ১০ হাজার ৫৫০, ভোলদিঘির রোকেয়া ৪০ হাজার, একই গ্রামের ছায়েদ ১৫ হাজার, নিজমেহার গ্রামের মমতাজ ২০ হাজার, সাহাপুরের ফাতেমা ১৫ হাজার ২০০, নিজমেহার গ্রামের আমেনা আক্তার ৩০ হাজার ৫৫০, সাহাপুরের ফরিদা আক্তার ২০ হাজর, ভোলদিঘির মোতালেব ১২ হাজার, বাবুল হোসেন ৩০ হাজার, নিজমেহারের সাহিন আক্তার ২১ হাজার, কাজীরকাপের আমেনা বেগম ২৫ হাজার, ভোলদিঘির ফরিদা বেগম ৫০ হাজার ও কাজীরকাপের কবির হোসেন ৬৮ হাজার টাকা জমা দেন।

এভাবে প্রায় ১৯৬ জনের কাছ থেকে এক কোটি টাকার বেশি সংগ্রহ করে ফেলে এনজিওটি। পরে এই টাকা নিয়ে অগ্রগতি সংস্থার লোকজন গত বুধবার পালিয়ে যান।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্যমতে, তাঁদের কারও কারও বুধবার ঋণ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন অগ্রগতি সংস্থার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কেউ নেই। কক্ষ তালাবদ্ধ। কর্মকর্তাদের মুঠোফোনও বন্ধ। এরপর একে একে অন্য গ্রাহকেরাও বিষয়টি জেনে যান। গ্রাহকেরা বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে কার্যালয়ের সামনে ভিড় করতে থাকেন। পরে ১২ জন গ্রাহক শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। খবর পেয়ে শাহরাস্তি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈকত দাস গুপ্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারা বাড়ির মালিক ও ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কথা শোনে।

শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রতারণার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বার্তা কক্ষ,১৩ ডিসেম্বর ২০১৯