শাহরাস্তিতে গ্রাম পুলিশ কর্মচারীর ইউএনও নিকট স্মারকলিপি প্রদান

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে গ্রাম পুলিশ কর্মচারীর, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান।
মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তবর্তী কালীন সরকার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়,স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয় বরাবরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

৮ ডিসেম্বর রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়ন শাহরাস্তি উপজেলা শাখার উদ্যোগে
গ্রাম পুলিশ বাহিনীর (দফাদার ও মহল্লাদার) জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী দফাদার ১৯তম এবং মহল্লাদার ২০তম গ্রেডে বেতন ভাতাদি প্রদানের লক্ষ্যে এ স্মারক লিপি দাখিল করেন।
উক্ত স্মারকলিপিতে উল্লেখ রয়েছে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ২০১১ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইউপি সচিব) ও ইউপি হিসাব সহকারীদের ন্যায় গ্রাম পুলিশ বাহিনীর (দফাদার ও মহল্লাদার) জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী দফাদার ১৯তম এবং মহল্লাদার ২০তম গ্রেডে বেতন ভাতাদি প্রদানের লক্ষ্যে স্মারক লিপি দাখিল প্রসঙ্গে। মহাজন,
যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমরা আপনার অধীনে (স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে) ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশ (দফাদার ও মহল্লাদার) বটি। বর্তমানে একজন গ্রাম পুলিশ (দফাদার) এর মাসিক সম্মানী ৭,০০০/- (সাত হাজার) টাকা ও একজন গ্রাম পুলিশ (মহল্লাদার) এর মাসিক সম্মানী ৬,৫০০/- (ছয় হাজার পাঁচশত) টাকা মাত্র। এছাড়া গ্রাম পুলিশ (দফাদার) এর মৃত্যু/অবসর কালীন ৬০,০০০/- (যাট হাজার) ও গ্রাম পুলিশ (মহল্লাদার) এর মৃত্যু/অবসর কালীন ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা মাত্র প্রদান করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বাজারের উর্ধ্বগতির কারণে আমরা পরিবার নিয়ে বহুকষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। সামান্য সম্মানী দিয়ে আমাদের পরিবারগুলো দিনদিন অচল অবস্থায় পতিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, হিসাব সহকারী ও গ্রাম পুলিশ একই পরিষদের কর্মচারী বটে। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, হিসাব সহকারীগণ সরকারের দেওয়া ২০১৫ সালের বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি পাচ্ছে। অথচ গ্রাম পুলিশ বাহিনী চাকুরীর নিয়োগ দাতা ছিলেন ইউ.পি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে নিয়োগ কমিটি। বর্তমানে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯, স্থানীয় সরকার কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ২০১১ অনুায়ী গ্রাম পুলিশ বাহিনীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে নিয়োগ কমিটি করে সরকারি বিধিমালা মোতাবেক ও যাচাই-বাছাই পূর্বক গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়।

একই নিয়োগ বিধিমালার আলোকে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও হিসাব সহকারীদেরকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সভাপতিত্বে নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ তাদেরকে সরকারি জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা একই নিয়োগ বিধিমালার আলোকে নিয়োগ পেয়েও দিন-রাত ২৪ ঘন্টা টহলদারিত্ব ও প্রশাসনিক সকল কর্মকান্ডে সহযোগিতা সহ দায়িত্ব পালন করেও থোক বরাদ্দ থেকে সামান্য সম্মানী পেয়ে আসছি। যা বৈষম্যমূলক ও অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, দীর্ঘদিন থেকে আমরা দফায় দফায় বিভিন্নভাবে যৌক্তিক দাবি সহ আন্দোলন সংগ্রামে অশ্রুকণ্ঠে ন্যায্য দাবি জানিয়েও বঞ্চিত হচ্ছি। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে (২ জন সরকারি জাতীয় বেতন স্কেলভুক্ত এবং ১০ জন নির্ধারিত থোক বরাদ্দ থেকে সম্মানী ভাতাভুক্ত) মোট ১২ জন কর্মচারী দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও হিসাব সহকারীরা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী বেতন ভাতাদি পাচ্ছে এবং গ্রাম পুলিশ (দাফাদার ও মহল্লাদার) থোক বরাদ্দ থেকে সমান্য সম্মানী পাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার অনগণের অধিকার নিয়ে কাজ করে। সেই লক্ষ্যে আমরা অসহায় গ্রাম-পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ আমাদের ন্যায্য দাবী বাস্তবায়নের জন্য মহোদয় সমীপে বিনীতভাবে আবেদন জানাচ্ছি।

অতএব, মহোদয় সমীপে আকুল আবেদন, অস্বচ্ছল, অসহায় গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের (দফাদার ও মহল্লাদার) জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী দফাদার’কে ১৯তম গ্রেডে ও মহল্লাদারকে ২০তম গ্রেডে বেতন-ভাতাদি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার একান্ত। স্মারকলিপি প্রদান কালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ শাহরাস্তি উপজেলা শাখার সভাপতি আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রমজান আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন দফাদার মোঃ মাহবুব আলম, মনির হোসেন, মানিক হোসেন, শ্রী নিবাস, মোঃ নুরুন্নবীসহ সকল গ্রাম পুলিশ বৃন্দ।

প্রতিবেদক: মো: জামাল হোসেন,৯ ডিসেম্বর ২০২৪

Share