চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের নরিংপুর গ্রামে উন্নত জাতের গরুর খামার দিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন হুমায়ুন কবির। পাঁচটি বিদেশি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন, এখন খামারে ৩৩ টি গরু রয়েছে তার। খামারে সব চেয়ে বড় আকারের তিনটি গরু আছে যা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন খামার ব্যবসায়ী কবির।
খামার ঘুরে দেখা গেছে, ফিজিয়াম ও শঙ্কর জাতের ১৬ টি গাভি ও ১৪ টি বাচুরসহ তিনটি ষাঁড় গরু রয়েছে। উন্নতমানের শেটে রেখে গরুগুলোকে লালন-পালন করা হচ্ছে। প্রতিটি গরুর মাথার উপর ফ্যান রয়েছে। পানি নিংস্কাশনের সুব্যবস্থা আছে। মলমুত্র সহজেই পরিস্কার করা হয়।
খামার পরিচার্য করা জন্য ৪ জন শ্রমিক রয়েছে। দৈনিক ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক কাজ করেন। ঘাস কাটার মেশিন রয়েছে, তা দিয়ে সহজে ঘাস ও খড় কাটা হয়। একজন পশু ডাক্তার আছেন। তিনি কয়েকদিন পর পর এসে গরুগুলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যান। বর্তমান খামারে গরুর কোন রোগ-বালাই নেই, প্রতিটি গরু সুস্থ্য রয়েছে।
প্রতিদিন গাভি ৪০ থেকে ৫০ লিটার দুধ দিয়ে থাকে। খামারের শ্রমিকরা বলেন,আমরা এই খামারে ৪ জন শ্রমিক রয়েছি। দৈনিক আরো ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক আমাদের সাথে কাজ করেন।দিনে ২জন ও রাতে ২ জন খামার পরিচার্য করি। দিনে আমরা যারা কাজ করি তারা মাসে ১০ হাজার টাকা বেতন পাই। আর রাতে অনেকেই ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা মাসিক বেতন পেয়ে থাকি। আমাদের এ কর্মসংস্থানের কারণে আমরা আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারছি।
হুমায়ুন কবির জানান ,আমি আমার মায়ের নামে নুরজাহান গবাদি পশু খামার নামেই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করি ২০১৮ সালে। ৪০ শতাংশ জমির উপরে তিনটি সেট করে এই খামারের কার্যক্রম শুরু করি। আমার খামারে বর্তমানে ৩৩ টি গরু রয়েছে। আমার খামার করার মূল উদ্দেশ্য হলো এর মাধ্যমে এলাকার কিছু বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করা।
আমিও ১৯৮৩ সালে কবিরাজের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার বাম হাত কেটে ফেলতে হয় ।আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।ছোটকাল থেকে বাবার সাথে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করি ।আমি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করি আমার মায়ের নামে আমি কিছু বেকার যুবকের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করবো। পাশাপাশি আমি নিজেও একজন সফল খামারি হিসেবে স্বাবলম্বী হবো। আমি আশা করি আমার এই খামারের মোটাতাজাকরণ ও দুধ বিক্রি করে বছরে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হুমায়ুন কবির আরও জানান,এলাকার অনেক বেকার যুবক আমার খামার দেখে খামার তৈরিতে আগ্রহ হচ্ছে এবং খামার সম্পর্কে জানতে চায়। অনেকেই আবার দুই চারটা করে দেশি-বিদেশি গরু কিনে বাড়িতে খামার তৈরি করছে। আমার খামারে বর্তমান প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার গরু রয়েছে। যুবকেরা উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আমার যতটুকু সহযোগিতার আমি তা অব্যাহত রাখবো।আমি সরকারের সহযোগিতা পেলে আমার খামারটি আমি আরো পরিসরে আরো যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবো।আমি এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রতিবেদক:মোঃ মাহবুব আলম,৩১ মার্চ ২০২১