চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে কথিত ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে অসহায় পরিবারের ফাতেমা বেগম। ঘটনাটি উপজেলার টামটা দক্ষিন ইউনিয়নের বলশীদ দৈলবাড়িতে ঘটে।
জানা যায়, দৈলবাড়ি দীঘিরপাড়ের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম রক্ত শুন্যতা রোগ নিয়ে কথিত ডাক্তার মোতাহের হোসেন সুমনের কাছে যায়। তখন তিনি রোগির কিছু শারিরীক পরীক্ষা দেন। যা পরবর্তীতে সীলগালা করা মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরীক্ষা করান। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তিনি ঔষধ ও ২০ ইনজেকশন প্রদান করেন। ইনজেকশনের প্বার্শ প্রতিক্রিয়ায় রোগী এখন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন।
এবিষয় ফাতেমার স্বামী সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ডাঃ এসএম মোতাহের হোসেনকে বিবাদী করে শাহরাস্তি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের পর কথিত ডাক্তার স্থানিয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে রোগীর এলাকায় একটি সালিশ দরবারের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
অভিযোগের বাদী সাইফুল ইসলাম জানান, আমি গরীব ও অসহায় একজন মানুষ। ডাক্তার মোতাহেরের কিছু দালাল রয়েছে আমাদের বলশীদ এলাকায়। যারা অসহায় পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে মোতাহের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। আমি যখন যেটা পাই সেই কাজটাই করি। ঘটনার দিন আমি রাজ মিস্ত্রীর সাথে জুগালীর কাজে গিয়েছিলাম। আমি বাসায় ফিরলে আমার স্ত্রী ফাতেমা আমাকে বিষয়টি জানায়। পরবর্তিতে ওই ডাক্তারের চিকিৎসা চলমান রাখি। একটা সময় আমার স্ত্রী আরও অসুস্থ হতে থাকে। তখন আবার ডাক্তার মোতাহেরের কাছে গেলে তিনি পুরাতন চিকিৎসা পত্র ছিঁড়ে আবারও নতুন চিকিৎসা পত্র ও নতুন ঔষধ লিখে দেন। আমার স্ত্রীর সকল শারিরীক পরীক্ষা কালিবাড়ির মা ও শিশু হাসপাতালে করান। প্রায় ৪০ হাজার টাকার পরীক্ষা দেন তিনি। একটা সময় আমার স্ত্রীর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। তখন আমি অন্য ডাক্তার শ্বর্নাপন্ন হই। তখন সেখানে গেলে দেখা যায়, মোতাহের ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারনে আজ আমার স্ত্রীর এই অবস্থা। দীর্ঘ মেয়াদী ও ব্যাপক ব্যয় বহুল চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তুলতে হবে বলে জানান তিনি।
ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, সাইফুল অত্যন্ত গরীব ও অসহায় একজন মানুষ। সে খুবই সহজ সরল প্রকৃতির লোক। ডাক্তার মোতাহের হোসেন প্রকৃত পক্ষে কোন চিকিৎসক নন। গরীব ও অসহায় মানুষকে চিকিৎসার নামে তাদের রক্ত চুষে খায়। আজ সাইফুলের স্ত্রী মৃত্যু শয্যায়। ছোট ছোট দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে তাদের। পুরাতন একটি দোচালা ঘরে তাদের বসবাস। এমন অসহায় মানুষটি ক্ষতির জন্য মোতাহের ডাক্তারের সঠিক বিচার হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
ডাক্তার মোতাহের বলেন, আমি সঠিক চিকিৎসা দিয়েছি। রোগীনি অন্য চিকিৎসকের সহযোগিতা নিয়ে তার শারিরীক সমস্যা সৃষ্টি করেছেন। এটার জন্য আমি কেন দায়িত্ব নিবো। এই ইনজেকশন আপনি দিতে চিকিৎসা পত্রে লিখতে পারেন কিনা?
এমন প্রশ্ন করলে তিনি নিরবতা পালন করেন।
এলাকাবাসী বলেন, এই ডাক্তারের দ্বারা একই বাড়ির আরেক নারী রোগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ঘটনায় ডাক্তার মোতাহের ১লক্ষ টাকা জরিমান প্রদান করেন। এই ডাক্তারের চিকিৎসা প্রদানের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের নজরদারিতা একান্ত প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।
শাহরাস্তি প্রতিনিধি, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪