দীর্ঘদিন ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন বিতর্কিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সেখান থেকেই বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের নানা ইস্যু নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে বা নানা জায়গায় মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন তিনি। বরাবরই বেছে নেন ‘হট টপিকস’।
এবার তিনি ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবানার সমালোচনা করলেন। আজ ১৯ জুলাই নিজের ব্যক্তিগত ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন তসলিমা। সেখানে এই অভিনেত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি লিখেছেন, “শাবানা এতকাল পরপুরুষকে আলিঙ্গন করে, তাদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নেচে যে ‘পাপ’ কামিয়েছেন, তা মোচন করতে হজে যাচ্ছেন, মসজিদ মাদ্রাসা বানাচ্ছেন।’
প্রায় এক যুগ আগে শাবানা মুসলমানের দেশ ত্যাগ করে ইহুদি নাসারাদের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চলে গেছেন বলেও তসলিমা জানান।
তসলিমা তার স্ট্যাটাসে লেখেন, বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবানা এখন আর অভিনয় করেন না, এখন তিনি বোরখা পরেন। ইসলামের গভীর জলে শরীর মন সব ডুবিয়ে দিয়েছেন এবং মুসলমানের দেশ ত্যাগ করে ইহুদি নাসারাদের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় একযুগ আগে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চলে গেছেন। তবে দেশে ফিরে ক’দিন আগে দেশের মানুষের জন্য একটি মসজিদ আর কোরান শিক্ষার ইস্কুল বানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি নিশ্চিতই বেহেশতে যেতে চান। এতকাল অভিনয় করে, পরপুরুষকে আলিঙ্গন করে, তাদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নেচে যে ‘পাপ’ কামিয়েছেন, তা মোচন করতে নামাজ রোজা তো করছেনই, হজে যাচ্ছেন, মসজিদ-মাদ্রাসা বানাচ্ছেন।’
স্ট্যাটাসে আরও বলা হয়, ‘টাকা থাকলে আমাদের দেশের বেহেস্তলোভী মূর্খগুলো ঠিক এই কাজই করে। মহল্লায় মহল্লায় এখন শত শত অপ্রয়োজনীয় মসজিদ। এই মসজিদগুলোর খুতবা শুনে শুনে ছেলেরা বিপথে যাচ্ছে, জিহাদি হচ্ছে, যুক্তিবাদিদের, মানববাদিদের, অমুসলিমদের, নারীদের ঘৃণা করা শিখছে।
মাদ্রাসায় আকছার ধর্ষণও হচ্ছে। বাংলাদেশের মসজিদ মাদ্রাসাগুলোয় কী শেখানো হয়, কী হয়- তা লক্ষ রাখার জন্য কোনো সরকারি ব্যবস্থা নেই। একটা রুগ্ন, পঙ্গু, অসুস্থ, দুর্বল, বিকৃত, লোভী, স্বার্থপর প্রজন্ম তৈরি করার জন্য মসজিদ মাদ্রাসার ভূমিকা অপরিসীম।’
তসলিমা শাবানাকে নিয়ে তার স্ট্যাটাসে আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বাসই শুধু করেন শাবানা, ভালো কিছু শেখেননি ওখানে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধনীদের দানের টাকায় চলে। আপনার টাকা পয়সা প্রচুর। আপনি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে দিন। বাংলাদেশে কোরান শিক্ষার ইস্কুলের অভাব নেই, অভাব বিজ্ঞান শিক্ষার ইস্কুলের। অভাব ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, নারী স্বাধীনতা, সমানাধিকার, মানবাধিকার, ইত্যাদি ভালো জিনিস শেখার ইস্কুলের। দেশের ভালো চাইলে ছেলেদের নারীবিদ্বেষী মোল্লা আর জিহাদি জঙ্গি না বানিয়ে মানুষ বানানোর চেষ্টা করুন।”
এই স্ট্যাটাস ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল তর্ক-বিতর্ক। তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাসের নিচেও অনেকে স্ট্যাটাসটির সমালোচনা করছেন। তবে বেশিরভাগ মন্তব্যই তসলিমাকে সমর্থন দিয়ে।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:১৫ পি.এম, ১৯ জুলাই ২০১৭,বুধবার
ইব্রাহীম জুয়েল
এলএ