চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক শাক-শবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১ টি চরাঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। চরাঞ্চলে ও স্থানীয়ভাবে নারীরাই এ সব শাক-শবজি উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
দিন রাত পরিশ্রম করেই তারা এ শাক-সবজি উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে । কোনো কোনো এলাকায় বাণিজ্যিভাবে শাক-সবজির চাষাবাদ করে।
চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন সরিষা, মরিচের পরেই শাক-সবজির স্থান। এটি এখন বেশ লাভজনক।
এ বছর চাঁদপুরে ৩৭ হাজার ৭শ’ ২৫ মে. টন শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২ হাজার ৫ শ’ ১৫ হেক্টর ।
আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের শাক-সবজি চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ ,সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলিতে ব্যাপক শাক-সবজির উৎপাদন করে থাকে চাষীরা। অতীব দু:খের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলি। চাষীরা ঋণসহায়তা পেলে শাক-সবজি চাষাবাদে আরোও উৎসাহী হতো।
চরাঞ্চলগুলি হলো- মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭শ’ ৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২ শ’ ৫০ মে.টন।
মতলব উত্তরে চাষাবাদ ৪ শ’ ১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ১ শ’ ৫০ মে.টন।
মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ১ শ’ ৭৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬ শ’ ২৫ মে.টন।
হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ২শ’ ৪৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬শ’ ৭৫ মে.টন।
শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ৫ শ’ ৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৩শ’ ৮৫ মে.টন।
কচুয়ায় চাষাবাদ ২ শ’ ৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬শ’ মে.টন।
ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ৮ শ’৭০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮ শ’৭৫ মে.টন।
হাইমচরে চাষাবাদ ১ শ’ ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮ শ’ ৫০ মে.টন।
শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে – বেগুন, লাউ, কুমড়া,গাঁজর, খিরা, করলা,পালং শাক, চিচিঙ্গা ও বরবটি প্রভৃতি।
চাঁদপুরের কুমারডুগি, মহামায়া,দেবপুর,মাস্টার বাজার,সুন্দরদিয়া এলাকায় ব্যাপকহারে বাণিজ্যিকভাবে চাষিরা এ সব শাক-সবজির চাষাবাদ করে থাকে ।
প্রতিবেদক-আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:০০ পিএম, ৮ এপ্রিল ২০১৭,শনিবার
এজি