আর একজন নারীকেও ধর্ষণের শিকার হতে দেব না, আর একজন পুরুষকেও ধর্ষক হতে দেব না’ এই শিরোনামে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারীর প্রতি সব ধরনের নির্যাতনবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। ওই প্রতিবাদ সমাবেশে ইংরেজি গান বাজিয়ে ফ্ল্যাশ মবের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভিডিওটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচানার জন্ম দিয়েছে।
বুধবার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উপলক্ষে ২২টি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা নারী ও শিশুর ওপর ধর্ষণসহ সবধরনের অত্যাচার বন্ধের আহ্বান জানান। সেখানে আয়োজক সংস্থার প্রতিনিধিরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নানা শ্রেণি ও সংগঠনের কর্মী, সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, যৌন কর্মী, অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার, ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুর পরিবারের সদস্যরাসহ অনেকেই।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঘরে-বাইরে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবখানে নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন চলছে। ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি ছাড়াও অ্যাসিড আক্রমনসহ নানাবিধ সহিংসতার শিকার হচ্ছেন তারা। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেও নিরাপদ নয় নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী ও শিশু।
এদিকে ভাইরাল ওই ভিডিও ক্লিপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে রীতিমতো বেশ সমালোচনা চলছে। ‘গেরিলা ১৯৭১’ নামে এক ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছে, ‘‘পরিমিতিবোধ হারানো, ইতিহাস বিস্মৃত ও সর্বসংহারি বিকৃত আচরণের ক্ষেত্রে আমাদের তুলনা সম্ভবত পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এবার আমাদের অবিশ্বাস্য অশ্রদ্ধা ও অসম্মানের কবল থেকে বাঁচেনি রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি।
কোন কুতর্ক উসকে দিতে নয়, নারী আন্দোলনকে হেয় করতেও নয়, নিপীড়নের পক্ষেও নয়, মনের সব বদ্ধ দুয়ার খুলে একবার চিন্তা করুন তো, খুব বেশি প্রয়োজন ছিল কি, শহীদ মিনারে ইংরেজি গান বাজিয়ে এই ফ্ল্যাশ মবের? ভাষা শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে ‘ফ্ল্যাশ মব’ চর্চা করে আর যাই হোক, ন্যায়সঙ্গত দাবী’র পক্ষে সোচ্চার হওয়া যায় না।
আফসোস, আমাদের ভাষার জন্যই মানুষগুলো নিজ প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন! আফসোস, অধঃপতনের চূড়ান্ত সোপানে দাঁড়িয়েও আমরা সবাই নির্বিকার। এই দায়ভার ব্যাক্তির নয়, এই দায়ভার সম্মিলিত ও সুনির্দিষ্টভাবেই আমাদের সবার। এবং এই বাংলাদেশই আমাদের বাংলাদেশ, এই কুৎসিত কদর্য ঘটনাটিও অবক্ষয়েরই অংশমাত্র।
আমাদের ‘গ্লানি’ মুছে যায়না, বরং যুক্ত হয় অমোচনীয় নতুন ‘গ্লানি’, আগামীতে কি অপেক্ষা করছে জানা নেই।’’
ভিডিওটি নিয়ে সাইয়েদ নাজমুল হোসাইন নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমি যতটুকু জানি, শহীদ মিনারে কিছু করতে হলে এই পবিত্র স্থাপনা রক্ষনাবেক্ষনে নিয়োজিত সরকারি কতৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ অনুমোদন নিয়ে করতে হয়। তাই কতৃপক্ষের এ ধরনের উদাসীনতা অবশ্যই জোরালো জবাবদিহিতার দাবি রাখে।
বার্তা কক্ষ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur