সারাদেশ

শরীয়তপুরের সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে মেয়েকে হত্যা : রাস্তায় কাঁদলেন মা

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়ের মা বলেন, যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে হত্যা করেছে আল-আমিন। আমার মেয়ের যে ময়নাতদন্ত হয়েছে তা সঠিক হয়নি। আমি পুনরায় ময়নাতদন্ত চাই। আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের জবরদখল গ্রামের গৃহবধূ আকলিমা বেগমের হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন মা সাহিদা বেগম।

আকলিমার ভাই সাইফুল সরদার বলেন, আল-আমিন যখন আমার বোনকে নির্যাতন করতেন তখন ঘরের মধ্যে বিকট শব্দ করে সাউন্ড বক্স বাজাতেন। যাতে করে প্রতিবেশীরা নির্যাতনের শব্দ না পান। এভাবে নির্যাতন করে আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। আমার বোনের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আল-আমিনের ফাঁসি চাই।

জানা যায়, ১৩ বছর আগে প্রেম করে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের জবরদখল গ্রামের গিয়াসউদ্দিন সরদারের ছেলে আল-আমিন সরদারের সঙ্গে
একই গ্রামের শরীফ সরদারের মেয়ে আকলিমা বেগমের বিয়ে হয়। রিয়া মনি (৬) নামে এক মেয়ে ও রিয়াজ (১২), মিরাজ (৮) নামে দুটি ছেলে রয়েছে তাদের।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আকলিমাকে নির্যাতন করতেন আল-আমিন। একদিন আল-আমিন কলস দিয়ে আঘাত করে আকলিমার কানের পর্দা ফাটিয়ে দেন। আকলিমা নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাবার বাড়ি থেকে ধাপে ধাপে পাঁচ লাখ টাকাও দেয় আল-আমিনের পরিবারকে। আরও দেড় লাখ টাকা যৌতুকের জন্য ৮ ডিসেম্বর রাতে নির্যাতন করে হত্যার পর আকলিমাকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

৯ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে আকলিমার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে স্বামী আল-আমিনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

মায়ের দাবি, একই গ্রামের গিয়াসউদ্দিন সরদারের ছেলে আল-আমিন সরদার (৩৫) আকলিমাকে হত্যা করেছেন। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও খুনির ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কাঁচিকাটা ইউনিয়নবাসী।

১২ জানুয়ারি রোববার বিকেল ৪টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করা হয়। এতে নিহতের মা সাহিদা বেগম, বাবা শরীফ সরদার, ভাই সাইফুল ইসলামসহ ইউনিয়নবাসী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা সাহিদা বেগম।

সখিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বলেন, আকলিমার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে আত্মহত্যা করেছে। তার স্বামী আল-আমিন জেলহাজতে। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।

করেসপন্ডেট

Share