Home / বিশেষ সংবাদ / ৩০টি কঠিন রোগের অন্যতম কারণ হলো শব্দদূষণ
সাউন্ড সিস্টেম

৩০টি কঠিন রোগের অন্যতম কারণ হলো শব্দদূষণ

শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দসৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বোঝায়। গাড়ির হর্ন,কলকারখানা,মাইকের অসতর্ক ব্যবহার,নির্মাণকাজ থেকে দূষণ সৃষ্টিকারী তীব্র শব্দের উৎপত্তি হয়। বর্তমানে ৩০টি কঠিন রোগের অন্যতম কারণ হলো শব্দদূষণ।

পরিবেশের কোলাহল থেকেও মারাত্মক শব্দদূষণের সৃষ্টি হতে পারে। কোলাহল হলো অনাকাক্সিক্ষত শব্দ যা বিরক্তির উদ্রেক করে এবং শোনার সময় তা অসংহত ও উচ্চ মনে হয়। উচ্চকিত কোলাহলের ফলে মানুষের ওপর অনুভূতিগত,শারীরিক অথবা মানসিক প্রভাব পড়তে পারে।

অল্প মাত্রার সহনীয় শব্দ শরীর ও মনের জন্য ক্ষতিকারক নয়। তবে বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপন্ন অতি মাত্রায় জোরালো ও অপ্রয়োজনীয় শব্দ যখন মানুষের সহনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়ে বিরক্তি ঘটায় এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তখন তাকে শব্দদূষণ বলে। শব্দদূষণ সমগ্র বিশ্বেই এক গুরুতর সমস্যা। মানবসৃষ্ট যেকোনো উচ্চ শব্দ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

শহরের আবাসিক এলাকায় শব্দ বা আওয়াজের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৩৫ থেকে ৪৫ ডেসিবল, আর নগরে-বন্দরে ৪৫-৫০ ডেসিবলের বেশি নয়। কিন্তু আমাদের দেশে শহর, নগর ও বন্দরে শব্দদূষণের মাত্রা ৮০ থেকে ১০০ ডেসিবলেরও বেশি।

এ কারণে শব্দদূষণের পরিণাম অবশ্যই ভয়াবহ। শব্দদূষণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ চিন্তা ও চেতনায় বাধা সৃষ্টি করে। নগরজীবনে স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে শব্দদূষণ। সম্প্রতি শহর বন্দর নগরে নির্মাণকাজ এবং যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ সমস্যা আরো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

এতে একদিকে জনগণ যেমন শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছেন,সেই সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শব্দদূষণ দুশ্চিন্তা,অবসাদ,উদ্বিগ্নতা,নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি বাড়িয়ে দেয়,যা দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিত অতিরিক্ত হেডফোনের ব্যবহার, গাড়ির অনাকাক্সিক্ষত হর্ন,নির্মাণকাজের শব্দ,ধর্মীয় সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক প্রচারণায় মাইকের অসতর্ক ব্যবহার এবং গভীর রাতে বিভিন্ন মহল্লায়-কুকুরের উচ্চ শব্দ ইত্যাদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধীরে ধীরে বধিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে,বাংলাদেশে শব্দদূষণের কারণে অনেক মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে।

দেশের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালায় স্পষ্ট বলা আছে,কোনো এলাকায় দিনের কোন সময়ে,কী ধরনের শব্দদূষণ সৃষ্টি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

শব্দদূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আর বিশেষ করে ঢাকা মহানগরীতে শব্দদূষণের বহু উৎস রয়েছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। রাস্তাঘাটে মাইক ব্যবহার করে পণ্য বিক্রি করা,শিল্প-কারখানা কোনো ক্ষেত্রেই শব্দদূষণ বিষয়ে যেসব নিয়ম রয়েছে তা মানা হচ্ছে না।

বার্তা কক্ষ , ২৬ জুন ২০২১
এজি