বাংলাদেশের ২১তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন মো. আবদুল হামিদ। মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী তার শপথ বাক্য পাঠ করান। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি পদে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিলেন তিনি।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানান।
বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতার পর থেকে ১৭ জন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে মো. আবদুল হামিদই হচ্ছেন প্রথম ব্যক্তি যিনি পরপর দুইবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ২৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দেওয়ার তারিখ ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি এবং নির্বাচনের তারিখ ছিল ১৮ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নাম দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়। এ নির্বাচনে আর কেউ প্রার্থী না হওয়ায় ভোটাভুটির আর প্রয়োজন হয়নি।
২০১৩ এর ২৪ এপ্রিল প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ।
তিনি ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন। ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে, ১৯৮৬ সালে ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন,
১৯৯১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালে ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০১ সালে ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ১৩ জুলাই ১৯৯৬ থেকে ১০ জুলাই ২০০১ পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ১২ জুলাই ২০০১ থেকে ২৮ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি ২০০১ সালের ১ নভেম্বর থেকে বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ উনাকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৩’ প্রদান করা হয়।
মো. আবদুল হামিদ বিবাহিত। তিনি তিন পুত্র ও এক কন্যার জনক। বিভিন্ন দেশের সংবিধান ও ইতিহাস গ্রন্থ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্বলিত পুস্তক পাঠ করা তাঁর প্রিয় শখ।