আবহাওয়া দুর্যোগের কারনে নিউমোনিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ৩ ’দিনে প্রায় দেড় শতাধিক শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। শহর এবং জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার ও নার্সরা।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেস্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক শিশুরোগী ভর্তি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। আবহওয়া দুর্যোগের কারনে বিভিন্ন বয়সী শিশুরা জ্বর, সর্দি, কাশি, বমি, পাতলা পায়খানাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য হওয়ার কারন বলে জানা গেছে। আর এসব শিশু রোগীদের বয়স নবজাতক হতে ৮/৯ বছর বলে হাসপাতালের ডিউটিরত নার্সরা জানান।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে নার্সদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভাইরাল ফিভার, কাশি, নিমুনিয়া, কনর্ভানশান (খিচুনি) রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শিশু রোগী বেডের চাইতে অনেক বেশি ভর্তি হওয়ায় তাদেরকে ফেøারে ও মেঝেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শিশু বিভাগের প্রত্যেকটি বিছানা পরিপূর্ণ হয়ে রোগীরা মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশুরোগী জ্বর ও নিউমনিয়ায় আক্রান্ত।
এ সময় রোগীর সাথে থাকা মায়েরা ও অভিভাবকরা অভিযোগ করে জানান, হাসপাতাল থেকে শিশু রোগীদেরকে প্রয়োজনীয় ঔষধ দেয়া হচ্ছে না। তাদেরকে বাহির থেকে বেশিরভাগ ঔষধ ক্রয় করতে হচ্ছে।
১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারি হাসপাতালের তৃতীয় তলার শিশু বিভাগে সরজমিনে গিয়ে দেখাযায় ওই বিভাগের নার্সদের রুমের সামনে ভিড় জমিয়ে চিকিৎসা সেবার জন্য অপেক্ষা করছে অভিবাবকরা। এবং হাসপাতালের শিশু বিভাগের সবক’টি বিছানা পূর্ন হয়ে মেঝেতে ও রোগীদের জন্য বিছানা পাতা হয়েছে। এসব শিশু রোগীরা নিউমোনিয়া, জ্বর, খিসুনী, সর্দি, বমিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও অনেক শিশু রোগীকে অভিভাবকরা হাসপাতালে নিয়ে এসে ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে যান।
খবর নিয়ে জানাযায় চাঁদপুর জেলা শহরে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৩ দিনে হাসপাতালে প্রায় দেড় শতাধিক শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে।
হাসপাতালের ৩য় তলার শিশু বিভাগের ডিউটিরত নার্সরা হাসপাতালের ভর্তিকৃত রেজিস্ট্রার খাতা দেখে জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সারাদিনে মোট ৪০ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর সারাদিনে ভর্তি হয়েছে ৫০ জন এবং ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ৪১ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে বলে তারা জানান। এসব শিশুরা বেশির ভাগই জ্বর, নিউমোনিয়া এবং জ্বরের সাথে খিসুনী রোগে আক্রান্ত বলে তারা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (শিশু বিশেষজ্ঞ) ডাঃ বিপ্লব দাসের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে শিশুরা হঠাৎ নিউমেনিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশ, বমি, পাতলা পায়খানাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। দেখাযায় হঠাৎ অতিরিক্ত গরম আবার বৃষ্টি এবং চারিদিকে পানি বৃদ্ধির আশংকা। এজন্য হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে শিশুদের পুষপুষে সমস্যা দেখা দিয়ে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া এবং ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এজন্য শিশুরা যেভাবে ঠান্ডা থেকে নিরাপদ থাকবে সেজন্য অভিভাবকদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: : আপডেট, বাংলাদেশ ১০: ৪০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ মঙ্গলবার
ডিএইচ