আমিরাবাদ-চাঁদপুর সড়কের ১৭ কি.মি. শতাধিক বাঁক

দাউদকান্দি উপজেলার আমিরাবাদ বাসট্যান্ড হতে চাঁদপুর সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমিরাবাদ থেকে কচুয়া উপজেলা ২৯, হাজীগঞ্জ ৪২ ও চাঁদপুর সদর ৬৩ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত। কম সময়ে কুমিল্লা ও ঢাকা পৌঁছাতে এ সড়কটি ব্যবহার করছে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ,কচুয়া, মতলব দক্ষিণ ও দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা।

তারা বলছেন,এসব বাঁকে আড়াআড়িভাবে সড়কের বিপরীত পাশ থেকে গাড়ি আসলে তা বোঝা যায় না। শীতের ঘন কুয়াশার কারণে সড়কটি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে যাত্রীবাহী বাস,প্রাইভেট কার, ট্রাক, পিকআপ, পণ্যবাহী যানবাহন, অটোরিকশা, সিএনজি, ভ্যানগাড়ি, মোটরবাইকসহ প্রায় ১০-১৫ হাজার বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। এত ব্যস্ততম ও জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে রয়েছে শতাধিক বাঁক। আর এসব বাঁকে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬৩ কি.মি. এ সড়কটির আমিরাবাদ থেকে কচুয়া উপজেলার সাচার বাজার পর্যন্ত ১৭ কি.মি. এলাকায় রয়েছে প্রায় শতাধিক বাঁক। তার মধ্যে আমিরাবাদে পাঁচটি, ইটাখোলায় ১২টি, শায়েস্তানগর ব্রিজ থেকে ৩০ মিটারের মধ্যে তিনটি, দোঘোরে একটি, মলয় স্টেশনে একটি শ্রীচাইল মোহাম্মদপুরে পাঁচটি, বটতলায় একটি মোস্তাকের মোড়ে একটি,পাঠানতুলীতে চারটি, নতুন বাজারে দুটি, পিপিয়াকান্দিতে আটটি, পিপিয়া রায়পুরে পাঁচটি, নারিকেলতলায় চারটি, মালাখালায় ১৩টি, বাড়ীপাড়ায় ১১টি, বায়েকমোড়ে ১১টি, সাচার বাজারে চারটি ও কলাকোপায় তিনটিসহ মোট শতাধিক বাঁক রয়েছে।

দাউদকান্দির মালাখালা বাজারের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন,‘ বাজারে পাঁচ সেকেন্ডের মতো সময়ও দাঁড়ানো যায় না। চোখের পলক ফেলতে সময় লাগে গাড়ি আসতে সময় লাগে না। এখানে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলোর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

কচুয়া টু ঢাকা সুরমা সুপার বাসের চালক রমজান বলেন, তিন বছর ধরে গাড়ি চালাই। এই সড়কে বাঁকের কারণে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে।

পিপাইয়াকান্দি গ্রামের মফিজুল ইসলাম বলেন, চল্লিশ বছর ধরে এই সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাই। ঘন ঘন মোড়ের কারণে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয়। বাঁকগুলো সোজা করার দাবি জানাচ্ছি।

আমিরাবাদ গ্রামের ট্রাকচালক মুরশিদ মিয়া জানান, মালবোঝাই ট্রাক নিয়ে যখন টানিংয়ে যাই। তখন অন্যগাড়ি আসলে ক্রসিং কষ্টকর। যানজট লেগে যায়। অতিরিক্ত বাঁকের কারণে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) কচুয়া উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি জিসান আহমেদ নান্নু জানান, আমিরাবাদ কচুয়া আঞ্চলিক সড়কের বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ সরলীকরণ (বাঁক) রয়েছে। বাঁকগুলো সোজা না করায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে। জনস্বার্থে বাঁকগুলো দ্রুত সংস্কার করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা জানান, এ সড়কের বাঁকের বিষয়ে আমরা অবগত আছি।

বাঁকগুলো সোজা করতে হলে নানা প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে এবং সময়ের প্রয়োজন। জমি অধিগ্রহণ, পরিকল্পনা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা প্রেরণ। তারপর টেন্ডার হলে ঠিকাদারের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

তবে, সহসায় এ কাজ শুরু হবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সোজা করার ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করছি।

১৫ ডি সে ম্ব র ২০ ২ ৫
এ জি