কচুয়ায় সদস্য পদে প্রার্থীদের লড়াই হবে ত্রিমুখী

বহুল প্রতিক্ষীত চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন। সোমবার ১৭ অক্টোবর সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে কচুয়া উপজেলা পরিষদ মিলনাতয়নে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোবাইল প্রতীকে আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী ও আনারস প্রতীকে মো জাকির হোসেন প্রধানীয়া প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন।

এছাড়া সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডে (কচুয়া,মতলব উত্তর-দক্ষিন) আসনে ফুটবল প্রতীকে তাছলিমা আক্তার আখি,টেলিফোন প্রতীকে রওনক আরা রত্না ও দোয়াত কলম প্রতীকে নাজমা আক্তার আসমা (আখি) প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন। এ তিন প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

অপর দিকে ৬নং ওয়ার্ড কচুয়া আসন থেকে সদস্য পদে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই এর সম্ভাবনা দেখছে সাধারণ মানুষ।

ভোটাররাও বলছে একই সম্ভাবনার কথা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে টানতে নিয়মিতভাবে ব্যাপক গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে জয় পরাজয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের অস্তিত্ব জড়িয়ে রয়েছে।

১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে কচুয়া উপজেলা থেকে সদস্য পদে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন,তৌহিদুল ইসলাম খোকা (টিউবওয়েল), জোবায়ের হোসেন (হাতি),সালাউদ্দীন ভূইয়া (অটোরিক্সা), আহসান হাবীব প্রানজল (তালা), সামছুল হক (উটপাখি) ও বিল্লাল হোসেন (সিলিং ফ্যান)।

ক্ষমতাসীন দলের এই ৬ প্রার্থীর মধ্যে খোকাকে (টিউবওয়েল) সরাসরি সমর্থন দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ড.মহীউদ্দীন খান আলমগীর,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম হোসেন সমর্থন জানিয়েছেন জোবায়ের হোসেনকে (হাতি) এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড.সেলিম মাহমুদ ছাত্র সমাবেশে সালাউদ্দীনকে (অটোরিক্সা) তার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সমর্থন জানান।

তিন নেতা তিনজনকে সরাসরি সমর্থন দেয়ায় এ আসনে ত্রিমুখী লড়াই হবে এতে কোন সন্দেহ নেই বলে মনে করা হচ্ছে। তিন প্রভাবশালী নেতা জেলা পরিষদের সদস্য পদে তিনজনকে সমর্থন করায় তাদের অনুসারীরা স্বস্ব প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে নিয়মিত প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

তৌহিদুল ইসলাম খোকার সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক নাজমুল হক মিঠু ও উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মাঈনউদ্দীন আহমেদ সবুজ বলেন,‘পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম খোকার নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। তার জয়ের বিষয়টি এখন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

অন্যদিকে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জোবায়ের হোসেনের সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আঃ জব্বার বাহার ও পৌর কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের রুমি বলেন, পূর্ব অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে তিনি অনেক আগ থেকেই ভোটারদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন। দেখছেন পুনরায় জয়ের স্বপ্ন। ’

আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দীন ভূইয়ার সমর্থক পৌর মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাজমুল আলম স্বপন এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর যুবলীগের সভাপতি মাহবুব আলম বলেন,সালাউদ্দীন ভূইয়া ইতিপূর্বে জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে তাঁর এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। তাছাড়া যুবলীগের একটি বড় অংশ বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি।

এছাড়া ভোটারদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। অন্য প্রার্থীদের তুলনায় আমাদের প্রার্থী সালাউদ্দীন ভূইয়া জনসমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন।

তিন প্রার্থীর বাহিরেও কচুয়ায় আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা হিসেবে পরিচিত মুখ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আহসন হাবীব প্রানজল লড়াইয়ের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। নির্যাতিত নেতা হিসেবে জনপ্রতিনিধিদেও কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে জানা গেছে ভোটারদের মাধ্যমে।

কচুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মেয়র,ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার ছাড়াও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ও ২জন ভাইস চেয়ারম্যান মিলে এ আসনে ভোটার ১৭২ জন। বিভিন্ন এলাকার চায়ের দোকানগুলোতে নির্বাচনে জয় পরাজয় নিয়ে রীতিমত বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। উপজেলার প্রায় সবখানেই প্রার্থীদের পোষ্টার দেখা গেছে। রয়েছে পেস্টুনও।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান,‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩১ জন এবং মহিলা ভোটার ৪১ জন। জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। সুষ্টু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

শেষ পর্যন্ত লড়াইটা হতে পারে খোকা,জোবায়ের ও সালাউদ্দীনের মধ্যে। তিনজনই কেন্দ্রীয় তিন নেতার অনুসারী। ফলে যেই জিতুক সেই বলয়েরই জয় হবে। কারন এই তিনজনের মধ্যেই শেষ লড়াই ও জয়ের হাসি ফুটবে। ফলে তাদের সমর্থক ও অনুসারীদের উত্তেজনা থাকলেও এখন কচুয়াবাসী তাকিয়ে আছে তিন নেতার প্রার্থীদের দিকে। কে পরবেন জয়ের মালা,সেটাই এখন দেখার পালা।

জিসান আহমেদ নান্নু,
১৬ অক্টোবর ২০২২
এজি

Share