Home / বিশেষ সংবাদ / লাশ দাফনের আট দিন পর জীবিত উদ্ধার!
লাশ দাফনের আট দিন পর জীবিত উদ্ধার!

লাশ দাফনের আট দিন পর জীবিত উদ্ধার!

‎Friday, ‎May ‎01, ‎2015  11:51:56 PM

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা :

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের আকবর নগরের মো. উজ্জল হোসেন (২৫)-কে দাফনের আট দিন পর চট্রগ্রাম থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে পার্টনারদের হাতে গনারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার কাশিপুরস্থ কলেজ রোডের নজরুল ইসলামের ভাড়া বাড়ি থেকে উজ্জল নিখোঁজ হয়। এরপর  গজারিয়া উপজেলার দড়ি বাউশিয়া এলাকার নয়াকান্দি নামক খাল থেকে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে।

পরদিন ১০ই সেপ্টেম্বর সকালে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে এসে মরদেহটি উজ্জলের বলে দাবি করে তার ভাই মিলন হোসেন ও মামা গিয়াসউদ্দিন। একই দিন ময়না তদন্ত শেষে লাশটি নিয়ে সিরাজদিখানের আকবর নগর গ্রামে নিয়ে বাদ আসর জানাযা শেষে দাফন করা হয়। কিন্তু ওইদিন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে মরদেহটি দেখে স্ত্রী নিলা আক্তার মরদেহটি উজ্জলের নয় বলে দাবি করে চলে যায়। উজ্জলের ভাই মিলন ও মামা গিয়াসউদ্দিনসহ তার স্বজনরা এতে কর্ণপাত না করে মরদেহটি নিয়ে দাফন করে ফেলেন।

এ ঘটনায় সন্দেহ হলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মো. ফজলুল হক তালুকদার মরদেহ শনাক্তে ডিএনএন টেস্টের জন্য মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জনের কাছে আবেদন করেন। ডিএনএ টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করে তা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে নিখোঁজ উজ্জলকে বুধবার চট্টগ্রাম থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। মো. উজ্জল হোসেন মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার আকবর নগর গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে পার্টনারদের হাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার কাশিপুরস্থ কলেজ রোডের নজরুল ইসলামের ভাড়া বাড়ি থেকে উজ্জল নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. মিলন হোসেন একই এলাকার আকবর নগর গ্রামের তাছির আলীর ছেলে ব্যবসায়ি পার্টনার আবুল হাশেম ও তার সহযোগী রাজবাড়ি জেলার সাথী (২৭)-কে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই আবুল হাশেমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে দু’দফায় পুলিশ রিমাণ্ডে নেয়া হয়।

নিহতের ভাই মিলন হোসেন মামলায় উল্লেখ্য করেছেন, আকবর নগর গ্রামের আবুল হাশেম ও উজ্জল ৬ লাখ করে ১২ লাখ টাকা দিয়ে ফতুল্লার কাশিপুরে মোমবাতি ও নেট ব্যাগ ব্যবসার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা দু’জন একই ফ্লাটে ভাড়া থাকতো। গত দেড় মাস আগে উজ্জল বাড়ি থেকে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা এনে আবুল হাশেমের হাতে দেয়। আবুল হাশেম ব্যবসায় কোন টাকা বিনিয়োগ না করে উজ্জলের টাকা দিয়ে দু’জনে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু এ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও ব্যবসা ছিল আবুল হাশেমের নিয়ন্ত্রণে। ব্যবসায় কোনো টাকা বিনিয়োগ ও হিসাব না দেয়ায় উজ্জলের সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধের জের ধরে রাতের যে কোনো সময় উজ্জলকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।  গজারিয়া উপজেলার দড়ি বাউশিয়া এলাকার নয়াকান্দি নামক খাল থেকে পুলিশ উজ্জলের লাশ উদ্ধার করে। পরদিন এটি উজ্জলের মরদেহ দাবি করে উজ্জলের ভাই মো. মিলন হোসেন ও মামা গিয়াসউদ্দিন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে আকবর নগর গ্রামে নিয়ে জানাযা শেষে লাশ দাফন করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মো. ফজলুল হক তালুকদার জানান, আগেই সন্দেহ হয়েছিল এটি উজ্জলের মরদেহ নয়। উদ্ধারকৃত ওই লাশটি পচে গলে গিয়েছিল। লাশ দেখে চেনার উপায় ছিল না। তাই ডিএনএন টেস্টের জন্য মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জনের কাছে আবেদন করা হয়।

তিনি আরো জানান, উজ্জ্বলের ভাই মিলনের দাবি ফটিকছড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি তার ভাই উজ্জল। মিলন ঘটনাস্থলে গেছেন। আর ফটিকছড়ি থানা থেকেও ফতুল্লা থানায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। এদিকে, মিলনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

এমআরআর/2015