চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে চিকিৎসা খরচ না চালাতে পেরে জোবায়েরা আক্তার মিনা নামে ১৩ মাস বয়সী একটি শিশুকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন এক দম্পতি। ২২ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মিনার চাচা আবদুল্লাহ।
এ ঘটনাটি ঘটেছে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন তিন নম্বর ওয়ার্ড ধেররা-বিলওয়াই গ্রামের ইউনুস মজুমদার বাড়িতে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে লোকজন জানাজানির পর ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান সন্তান বিক্রেতা বাবা মো.বশির ও মা আছমা আক্তার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ের মাধ্যমে রাজধানীতে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে সন্তানকে এক লাখ টাকা বিক্রি করে দেন মিনার বাবা-মা। এ নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু হলে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
শিশুটির বাবা মো. বশির জানান, ২০১৬ সালে সিএনজিচালিত স্কুটারের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসাজনিত কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এখন তিনি টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। এছাড়াও তিনি অসুস্থতার কারণে আয়-রোজগার করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, আমার সাড়ে তিন বছর ও ১৩ মাস বয়সী দুইটি কন্যাশিশু রয়েছে। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার কিনতে (ক্রয়) পারছি না। এদিকে অসুস্থতার কারণে কাজও করতে পারছি না। তাই ছোট মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিয়েছি। বিনিময়ে তারা আমার চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা দিয়েছে।
শিশুটির মা আছমা আক্তার বলেন, মেয়ের জন্য পরান পড়ে (মায়া লাগে)। কিন্তু কী করবো, আমার স্বামীর চিকিৎসা দরকার। তিনি অসুস্থতার জন্য কোন কাজ কর্ম করতে পারেন না। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের খাওয়া-পড়া। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েটারে দত্তক দিয়েছি।
হাজীগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর মহসিন ফারুক বাদল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দ্রুত এই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আমি একটি বিশেষ টিম প্রস্তুত করেছি। তারা শিশুকে উদ্ধারে কাজ করবে। তবে, দত্তক নেওয়ার কিছু আইনগত বিধান রয়েছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি জেনেছি এবং গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি, ২২ মার্চ ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur