ঢাকায় লাইসেন্স ছাড়া কারা দুধ বিক্রি করছেন, তাদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ তালিকা দিতে বিএসটিআইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিএসটিআই বলছে, মাত্র ১৮ প্রতিষ্ঠান পাস্তুরিত দুধ বিক্রি করতে তাদের লাইসেন্স নিয়েছে।
এ ছাড়া দুধের সিসা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) প্রধান ডা. শাহনীলা ফেরদৌসীকে প্রতিবেদন নিয়ে কোনো প্রকার বিরক্ত না করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে আদালতের নির্দেশমতে, ৩০৫টি নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে দুটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিম্নমানের বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বিএসটিআই। আর নমুনা সংগ্রহ করে পাঁচ জায়গায় পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদন দিতে এক মাস সময় চেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
আদালত-পরবর্তী আদেশের জন্য ১৫ জুলাই দিন রেখেছেন। আগামী ২৩ জুনের মধ্যে এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আদালতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এমআর হাসান মামুন। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। এর আগে গত ১৫ মে এক আদেশে ডা. শাহনীলা ফেরদৌসীকে তার প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ২১ মে সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন অধ্যাপক ড. শাহনীলা ফেরদৌসী।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘গাভীর দুধ ও দইয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, কীটনাশক, সিসা!’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গাভীর দুধে (প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া) সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও। একই সঙ্গে প্যাকেটজাত গাভীর দুধেও অ্যান্টিবায়োটিক ও সিসা পাওয়া গেছে মাত্রাতিরিক্ত। বাদ পড়েনি দইও। দুগ্ধজাত এ পণ্যেও মিলেছে সিসা।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) গবেষণায় এসব ফল উঠে আসে। সংস্থাটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক সহায়তায় গাভীর খাবার, দুধ, দই ও প্যাকেটজাত দুধ নিয়ে এ জরিপের কাজ করেছে।
ওই প্রতিবেদন নজরে আসার পর ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে গাভীর দুধ (প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া) ও বাজারের প্যাকেটজাত দুধ, দই এবং গো-খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তাতে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক, অ্যান্টিবায়োটিক, সিসা, রাসায়নিক মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর তা নিরূপণে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur