চাঁদপুর জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিউনিটি পুলিশিং, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাভিত্তিক গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সমন্বয়ে পারিবারিক নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাউন্সিলিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সামাজিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশ্রাফুজ্জামানের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ প্রশাসনের একটি টিম পুরাইবাজার মধ্য শ্রীরামদী এলাকা সফর করেন।
এসময় তাদের সাথে ছিলেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি সহ-সভাপতি ও কমিউনিটি পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চল-২ এর সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, চাঁদপুর জেলার কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুফী খায়রুল আলম খোকন, চাঁদপুর পৌর কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মনির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হক মোর্শেদ।
আরো উপস্থিত ছিলেন পুরাইবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন, এসআই প্রতিভা রানী সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স।
এলাকাবাসীর পক্ষে ছিলেন শাহজাহান মাতাব্বর, তাছির বেপারী, নজরুল ইসলাম নজু, মনোয়ারা মনু, রোসনে আরাসহ আরো অনেকে।
পুলিশ সুপার এসময় মধ্য শ্রীরামদী মেয়র রোড, বৌ-বাজার এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ পরিবারগুলোর স্বামী-স্ত্রী, স্কুল পড়–য়া মেয়ে, বৃদ্ধ বাবা-মা ও শিশুদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের সমস্যাগুলোর কথা শুনেন।
এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার সামসুন্নাহার এই কাউন্সিলিং সম্পর্কে বলেন, পুলিশ একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হয়েছে। সামাজিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার মানুষের সমস্যাগুলোর কথা শুনছি। পরিবারের কোনো ছেলে মাদকাসক্ত, পারিবারিক অশান্তি আছে কি-না, মেয়েরা স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ইভটিজিং, সৎ মায়ের দ্বারা কোন এতিম সন্তান অবহেলার শিকার হচ্ছে কিনা এবং বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে তাদের ছেলেরা ঠিকমত দেখছে কিনা, কোন স্ত্রী স্বামী দ্বারা অত্যাচারিত হচ্ছে কিনা তা জানার জন্য তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। কারণ অনেক পরিবারের মা বৌ- ঘর থেকে বের হয়ে এসব বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে পারছে না বা পুলিশের কাছে নালিশ জানাতে গেলে তার অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যাবে সে জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে আলাদা ভাবে পুলিশ সদস্যরা কথা বলছে। এসব বিষয়গুলোর খোঁজখবর নেয়া পারিবারিক সুখ-শান্তিতে কোন বিঘœ ঘটলো কিনা আমরা যদি এই রকমভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারি, স্বাভাবিকভাবে পুলিশের বিচরনের মাত্রা বেড়ে যাবে এবং পারিবারিকভাবে অপরাধের মাত্রাও কমে আসবে। পুলিশের উপস্থিতি দেখে তাদের মাঝে ভয় কাজ করবে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকারের জন্য চাঁদপুর পুলিশ প্রশাসন আলাদা পুলিশ অফিসার নিয়োগ করে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনছে। দূর দুরান্ত থেকে সাধারণ মানুষের আসা-যাওয়া অনেক কষ্ট আবার নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে এসে কথা বলাটাও বেশি কঠিন সেই জন্য আমরা ঘরে গিয়ে জিজ্ঞাসা করছি।
এই কার্যক্রম এখান থেকে শুরু পুরো চাঁদপুরের ওয়ার্ডভিত্তিক করা হবে। এই কর্মকান্ডের সাথে পুলিশ প্রশাসন ও কমিনিউটি পুলিশের প্রতিনিধি থাকবে। সাথে সাথে অঞ্চল ভিত্তিক বা পৌর এলাকার কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য নিয়ে টিম করা হবে। সবাই মিলে ৫ জনের একটি গ্র“ফ বাড়ি বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসা করবে তাদের সংসারে কোন অশান্তি আছে কিনা পুলিশ কে জানানো প্রয়োজন। ঘরে বসে তারা সমস্যা খুঁজে নিতে পারে সেই কাজটি করা হলে কোনো ধরনের অপরাধের পরিকল্পনা পরিবারিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। তারা সর্তক হবে এবং পরিবারে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সমাজে একটি গতিশীলতা আসবে।
আশিক বিন রহিম, চীফ করেসপন্ডেন্ট
|| আপডেট: ১২:৫২ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার
এমআরআর