বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবীতে শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে চাঁদপুরসহ সারা দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ২৭ নভেম্বর রোববার দিনগত রাত ১২টার পর থেকে অনিদৃষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘট শুরু।
আজ দিনভর চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট থেকে ঢাকা কিংবা অন্যান্য নৌ-রুটে কোন লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল সম্পূর্ণ ফাঁকা দেখা গেছে।
নৌযান শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে হঠাৎ দেওয়া ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়েছেন চাঁদপুরের লঞ্চ যাত্রীরা। স্থানীয়ভাবে কোনো ধরণের পূর্ব ঘোষণা না দেওয়া যাত্রীরা ঘাটে এসে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
ঢাকাসহ সকল রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে চাঁদপুরের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, গত ২৬ নভেম্বর দিনগত রাত ১২টার পর পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে সিডিউলের সবগুলো লঞ্চ ছেড়ে গেছে। সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। তাদের মধ্যে সুরাহা হলে আবার লঞ্চ চলাচল শুরু করবে।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কোনো লঞ্চ নেই। পুরো লঞ্চঘাট ফাঁকা। যাত্রীবহনকারী কিছু অটোরিকশা ঘাটে অবস্থান করতে দেখা যায়। তবে যেসব যাত্রী-শ্রকিক ধর্মঘটের বিষয়ে জানেন না, তারা ঘাটে এসে উপস্থিত হচ্ছেন।
লঞ্চে যাত্রীরা জানান, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বার বার লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে, তার দায়ভারও যাত্রীদের নিতে হয়েছে। এখন লঞ্চ শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে বিরোধ চলছে। তার দায়ভারও আমাদের নিতে হচ্ছে। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে লঞ্চঘাটে এসেছি। এসে দেখি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। আমরা যে দুর্ভোগে পড়েছি তার দায়ভার নিবে কে? আশা করি সরকারের হস্তক্ষেপে মালিক তাদের দাবি দাওয়া পুরন করে দ্রুত লঞ্চ চলাচল শুরু করবে।
এমবি সোনার তরী- ৪ লঞ্চের মাস্টার আলমগীর হোসেন, রফ রফ-৭ লঞ্চের মাস্টার দেলোয়ার হোসেন ও সুকানি নুরুল ইসলামসহ বেশ ক’জন লঞ্চ শ্রমিক চাঁদপুর টাইমসকে জানান, যে হারে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, সে হারে আমাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি পায়নি। বর্তমান বেতনে আমাদের জীবন যাপন করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
তারা আরো বলেন, আমাদের যে দাবি-দাওয়া ছিল, ২০২২ সাল চলে যাচ্ছে কিন্তু মালিকপক্ষ ও শ্রম মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের বেতন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।
প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম, ২৭ নভেম্বর ২০২২