চাঁদপুরে এমভি ডায়মন্ড লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া ও দ্বিগুণ যাত্রী বহন

কালাইয়া,চাঁদপুর ও ঢাকা নৌ-পথে চলাচলকারী এমভি ডায়মন্ড-৩ এর বিরুদ্ধে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অধিক যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে কালাইয়া থেকে চাঁদপুর হয়ে ঢাকা যাতায়াতকারী অনেক যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ করে উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, ১১ আগস্ট বুধবার সকাল ৮ টার দিকে এম বি ডায়মন্ড-৩ কালাইয়া থেকে প্রায় এক হাজারেরও বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়া হয়। সেটি চাঁদপুর ঘাট হয়ে, সেখান থেকে যাত্রী উঠিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যান।

অনেক যাত্রীদের অভিযোগ যেখানে যাত্রীবাহী এ লঞ্চটি ১০ ঘন্টায় ঢাকা সদরঘাট পৌছার কথা। সেখানে তা ১০ ঘণ্টার বিপরীতে ১৩ ঘন্টা সময় নিয়ে ঢাকা সদরঘাট গিয়ে পৌছেন। এর প্রধান কারণ ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন বলে মনে করছেন সচেতন যাত্রীরা।

যেখানে এমবি ডায়মন্ড-৩ লঞ্চটির ৪১২ জন যাত্রী বহনের ধারন ক্ষমতা রয়েছে। সেখানে ১ হাজারের অধিক যাত্রী বহন করে তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাত্রা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই লঞ্চে যাতায়াতকারী একাধিক যাত্রীদের কাছে আলাপ করে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।

শুধু তাই নয় ওইদিন কালাইয়া এবং চাঁদপুর থেকে ঢাকা যাতায়াতকারী মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, টিটু মিয়া গাজী, আব্দুল বারেক, ইলিয়াস পাটোয়ারী, নয়ন মৃধা, হাসু ছৈয়াল,নেয়ামত হোসেন, খলিলুর রহমান সহ একাধিক যাত্রীরা জানান,এম বি ডায়মন্ড ৩ লঞ্চটি বুধবার ঢাকায় যাওয়ার পথে যাত্রীদের কাছে থেকে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন।

যেখানে কালাইয়া কিংবা চাঁদপুর থেকে ডেকযাত্রীর নির্দিষ্ট ভাড়া ২৮৫ টাকা। সেখানে তারা ভাড়া কাটেন ৩০০/৪০০ টাকা। এবং চেয়ার ভাড়া কাটেন ৫০০/৬০০ টাকায়। এছাড়া যেখানে সিঙ্গেল ও ডাবল কেবিনের সাধারণ ভাড়া ১০০০/ ২০০০ টাকা। সেখানে ওইসব কেবিন ভাড়া কাটা হয় ১২০০/২৪০০ টাকা।

যাত্রীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘যেখানে ওই লঞ্চে যাত্রী বহনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৪১২ জন।সেখানে তারা এক হাজারেও বেশি যাত্রী বহন করেছেন।’

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের এমন অনিয়ম ও উদাসীনতায় অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে প্রায়ই নদীপথে ঘটে নানা রকম লঞ্চ দুর্ঘটনা। নৌ-পথে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকার বার বার সচেতনতা মূলক ভাবে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করার নির্দেশনা দিলেও। তা উপেক্ষা করেই অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে প্রতিনিয়ত নদী পথে চলছেন এসব লঞ্চ কৃর্তপক্ষ। নদীপথে অনাকাঙ্ক্ষিত লঞ্চ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এসব অসাধু লঞ্চ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন সচেতন মহল।

এ বিষয়ে ডায়মন্ড লঞ্চের ঘাট সুপারভাইজার মাইদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘আমাদের লঞ্চ এর ধারণক্ষমতা ৪১২ জন। ওইদিন শুধু আমরা একাই অতিরিক্ত যাত্রী বহন করিনি। অনেক লঞ্চেই ধারণক্ষমতার চেয়ে অধিক যাত্রী বহন করেছে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন আমাদের সিঙ্গেল কেবিন ১২শ’ টাকা এবং ডাবল কেবিন ২৪শ’টাকা ভাড়া কাটা হয়। এছাড়া ডেকযাত্রী এবং চেয়ার যাত্রীদের কাছ থেকে যেসব ভাড়া আদায় করা হয়েছে সেটা তারা না জেনেই লকডাউনের ভাড়া অনুযায়ী বাড়তি ভাড়া কেটেছেন। ’

এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক পক্ষ এমন অনিয়মের কথা অবগত আছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মালিক কর্তৃপক্ষ যেহেতু টাকা নেয় অবশ্যই তাদের নির্দেশনা রয়েছে এবং তারা তা জানেন। ’

এ বিষয়ে এমবি ডায়মন্ড লঞ্চের মালিক রেজাউল ইসলামের ব্যবহৃত নাম্বারে বেশ কয়েকবার তাঁর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,১২ আগস্ট ২০২১

Share