করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সরকারি নির্দেশনার প্রেক্ষাপটে বাড়ছে লঞ্চভাড়া। বাসের মতো লঞ্চভাড়াও ৬০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে আলোচনার পর ৩১ মার্চ বুধবার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের চিঠি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক।
এর আগে দুপুরে সচিবালয়ে ঈদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী লঞ্চভাড়া বাড়ছে বলে জানান। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি দু-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলেও জানিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার লঞ্চভাড়া চূড়ান্ত হতে পারে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে করে জানিয়েছেন।
করোনা সংক্রমণরোধে গত সোমবার (২৯ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
পরে ৩০ মার্চ মঙ্গলবার ৬০ শতাংশ বাস ভাড়া বাড়িয়ে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগ যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকরের কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
লঞ্চভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার জনস্বার্থে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লঞ্চ পরিচালনার জন্য বিআইডব্লিউটিএ থেকে ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর সংশ্লিষ্ট বন্দর নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা ও বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় জানিয়ে প্রস্তাবের চিঠিতে বলা হয়, এই সভায় ঈদ প্রস্তুতি গ্রহণসহ যাত্রীবাহী লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনা করা হয়। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পরিবহনে অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী প্রতিটি লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করার নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা ও লঞ্চ মালিক সমিতি লঞ্চের যাত্রীর ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করে।
‘সভায় বিআইডব্লিউটিএ এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা ও লঞ্চ মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ শুধুমাত্র করোনা সংক্রমণকালীন অর্থাৎ সরকারি প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত সময়ের জন্য লঞ্চের যাত্রীর ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা/সমিতির সঙ্গে বুধবারই আলোচনা সভায় বসে হয়। সভায় লঞ্চের যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সকলে ঐক্যমতে পৌঁছান।’
অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলের ক্ষেত্রে বর্তমানে ভাড়ার হার তুলে ধরে প্রস্তাবে বলা হয়, ১০০ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া প্রতি কিলোমিটার এক টাকা ৭০ পয়সা। ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব অর্থাৎ ১০০ কিলোমিটার পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের জন্য জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া প্রতি কিলোমিটার এক টাকা ৮০ পয়সা। এছাড়া জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ টাকা।
এমতাবস্থায় সরকারি প্রজ্ঞাপন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের প্রণীত গাইডলাইন অনুসরণ করে শুধুমাত্র করোনা সংক্রমণকালীন প্রতিটি অভ্যন্তরীণ নৌযানে যাত্রী ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচলের শর্তে বিদ্যমান ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে লঞ্চভাড়া নির্ধারণ করার প্রস্তাব বিবেচনার জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,৩১ মার্চ ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur