জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের পরিপ্রেক্ষিতে নৌযানে যাত্রী ভাড়া সমন্বয়ের লক্ষ্যে আটটি প্রস্তাব দিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত ওয়ার্কিং কমিটি।
কমিটি নৌযান ভেদে ১৯, ২২, ২৫, ৩০, ৩৫, ৪০, ৪২ ও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, শুক্রবার রাত ১২টার পর জ্বালানি তেলের নতুন দাম কার্যকর করে সরকার। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার পক্ষ থেকে নৌযানের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দুপুরে সচিবালয়ে বৈঠকে বসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল। তবে বৈঠকে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক শেষে সচিব বলেন, জ্বালানি তেলের নতুন দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ভাড়া পুনর্নির্ধারণের জন্য একটি চিঠি দিয়েছেন। এ ছাড়া লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও সভাপতি আমাদেরকে একটি চিঠি দিয়েছেন। আমরা সব স্টেক হোল্ডার যারা আছেন, তাদের নিয়ে ইমিডিয়েটলি সভাটা ডেকেছি, উনারা এখানে উপস্থিত আছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থা পক্ষ থেকে প্রস্তাব হচ্ছে প্রতি কিলোমিটার যেখানে আগে দুই টাকা ৩০ পয়সা ছিল, তা বৃদ্ধি করে ৪ টাকা ৬০ পয়সা করা এবং যা ২ টাকা ছিল, তা বৃদ্ধি করে ৪ টাকা করা। মূল্যবৃদ্ধি বা পুনর্নির্ধারণ প্রয়োজন আছে। কিন্তু এটা আমাদের কাছে একটু বেশি মনে হচ্ছে। এ কারণে আমরা একটি ওয়ার্কিং কমিটি করে দিয়েছি।
সচিব বলেন, সভা শেষে ওয়ার্কিং কমিটি বসবে। যেভাবে পূর্বে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, একইভাবে পুনর্নির্ধারণ করা হবে। আমরা কয়েকটি বিষয়ে এখানে বিবেচনায় নিচ্ছি। শুধু সদরঘাট নয়, সারা বাংলাদেশকে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের এক পর্যায়ে কমিটির প্রধান ও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস. এম. ফেরদৌস আলম সাংবাদিকদের জানান, মালিকরা জানিয়েছেন, একটি বাস চালাতে ৩ জন হলেও চলে। কিন্তু একটি লঞ্চ চালাতে ৬০-৭০ জন লোক লাগে। সে অনুযায়ী তারা ভাড়া বৃদ্ধির কথা বলছেন। কিন্তু তাদের সাথে কিছুতেই একমতে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর পর গত বছরের নভেম্বরেই লঞ্চের ভাড়া ৩৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়েছিল। নভেম্বরের আগে লঞ্চে ১০০ কিলোমিটার মধ্যে দূরত্বে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ছিল ১ টাকা ৭০ পয়সা। তখন তা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ৩০ পয়সা করা হয়েছিল।
১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া নভেম্বরের আগে ছিল ১ টাকা ৪০ পয়সা। তা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২ টাকা। আর লঞ্চের সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছিল নভেম্বরে।
বার্তা কক্ষ, ৯ আগস্ট ২০২২