আগামি একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়নে দেশব্যাপি দু’মাসের কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল বিএনপি। প্রথম মাসে ব্যাপক সাড়া পেলেও দ্বিতীয় মাসে আশানুরূপ ফল পায়নি দলটি।
এরপর লক্ষ্য পূরণে এক মাস সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু, তাতেও সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। তবে হাল ছাড়তে নারাজ দলটির হাই কমান্ড লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করেছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট নেতারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ অর্জন হয়েছে। লক্ষ্য পূরণে দ্বিতীয় দফায় আরও এক মাস সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সময় বাড়ানো হয়নি। জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের চিঠির মাধ্যমে বর্ধিত সময়ের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
সদস্য সংগ্রহের চলমান প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ার পরও সদস্য ফরম বিক্রি ও জমা নেয়া হবে। এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য থাকলেও তিন মাসে ৭০ লাখ সদস্য ফরম বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি ফরমের মূল্য ১০ টাকা। সেই হারে ফরম থেকে ৭ কোটি টাকা আয় করেছে বিএনপি।
জানা গেছে, জেলায় জেলায় কর্মসূচি উদ্বোধন করতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতাদের পাঠানো হয়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খুলনা, বরিশাল, ঠাকুরগাঁও, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে গিয়ে কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ঢাকার তার নিজ বাসভবনে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্ধোধন করেন। অনেক নেতাকর্মীরা আবার ঢাকায় এসে সদস্য ফরম সংগ্রহ করেন। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, দলের সমন্বয়হীনতার কারণে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতাসীনদের নির্দেশে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় আবার কর্মসূচি পণ্ড করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। রাজধানীর ধানমণ্ডি থানা ছাড়াও ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, খাগড়াছড়ি, কুষ্টিয়া, মাদারীপুরের শিবচর, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা সদস্য সংগ্রহের কর্মসূচিতে হামলা করা হয়েছে।
এছাড়া ২৭ জেলায় বন্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যু। ঘোষিত সময়ে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সদস্য সংগহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। আশা করছি, যে এক মাস সময় বাড়ানো হয়েছে, তার মধ্যে লক্ষ্যপূরণ করতে পারব।
একই প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসননের উপদেষ্টা আতাউর রহমান বলেন, এটিকে আমরা সফলতা বা ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি না। সদস্য সংগ্রহ রাজনৈতিক দলের চলমান প্রক্রিয়া। তবে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার পর ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। পরে প্রশাসন বিভিন্নভাবে বাধা দিলে ভাটা পড়ে। এরপর তো দেশে বন্যা শুরু হলো। আমরা দলের সর্বশক্তি নিয়ে বানভাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এসময় সদস্য সংগ্রহ কিছুটা ব্যাহত হয়। এখন আবার দেশে রোহিঙ্গা ইস্যু। এরপরও আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে এবারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এক কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহের টার্গেট পূরণে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি ওয়ার্ডে ২০০, পৌরসভার ওয়ার্ডে ৩০০ এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ হাজার করে নতুন সদস্য সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করা হয়।
এর আগে সর্বশেষ ২০০৯ সালে এই কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। ওই সময় বিএনপির সদস্য সংগ্রহের টার্গেট ছিল ৫০ লাখ।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১২ : ২৫ পিএম, ০৯ অক্টোবর, ২০১৭ সোমবার
এইউ