মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে চাঁদপুরের মতলব উত্তরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন। সরকার ঘোষিত সপ্তাহব্যাপি এই লকডাউন চলবে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।
এবারের লকডাউনে জেলার অধিকাংশ সড়ক ফাঁকা। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ওষধপত্র ও জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন ব্যতীত অন্যান্য সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঔষধের দোকান কয়েকটা খাবারের দোকান ও কাঁচা বাজার ব্যতীত অন্যসব বন্ধ রয়েছে।
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞানের মাধ্যমে মোট ২১টি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বিধি নিষেধ মানাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান, সহকারী কমিশনার আফরোজা হাবিব শাপলা, ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বিভিন্ন সড়ক ও বাজারে অভিযান পরিচালনা করছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অর্থদণ্ড করতে দেখা গেছে। ২১টি বিধিনিষেধ মাইকিং করে প্রচার করতেও দেখা যায়। সকাল থেকেই মতলব উত্তরের মূল সড়কগুলোয় যান চলাচল ছিল বেশ সীমিত।
মূলত লকডাউনের মধ্যে যেসব অফিস খোলা রাখা হয়েছে, সেখানকার কর্মীদের বহনকারী স্টাফ যান, দুই একটি প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও রিকশা চলতে দেখা গেছে।
রাস্তায় পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যদের মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ প্রাইভেট কার থামিয়ে পরিচয়পত্র যাচাই করছিলেন।
এদিকে বুধবার ঘোষণা করা ২১টি বিধিনিষেধের মধ্যে বলা হয়েছে, লকডাউন চলার সময়ে সব ধরণের গণ-পরিবহনসহ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেকোনো যান্ত্রিক পরিবহনের চলাচল করতে পারবে না।
বন্ধ রাখা হয়েছে সরকারি, আধাসরকারী, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিসসহ শপিংমল ও দোকানপাট।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জেলাসহ সারা দেশে করোনাভাইরাসের শনাক্ত ও মৃতের হার প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকায় এই সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনের নির্দেশ দেয়া হয়।
এবারের লকডাউন নিশ্চিত করতে বেশ কড়া অবস্থানে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেউ বাইরে বের হলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।
শুধুমাত্র ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা, জরুরি চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ সৎকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাইরে বের হওয়া যাবে।শিল্প কারখানা ও ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।
এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, কাঁচাবাজার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত, ফার্মেসি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
স্বাভাবিক থাকবে কৃষিপণ্য ও খাদ্যপণ্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, জরুরি চিকিৎসা সেবা, কোভিড ১৯ এর টিকা দেওয়ার কার্যক্রম।
এছাড়া প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি সেবা, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন/ইন্টারনেট/ডাক সেবা, বন্দরের কার্যক্রম নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।
খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে। কিন্তু পরিবেশন করতে পারবে না।
নিজস্ব প্রতিবেদক