চাঁদপুরের স্থলভাগের পাশাপাশি বিস্তীর্ণ নদীপথও লকডাউনের আওতায় থাকছে। তাই নদীতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। লকডাউন অমান্য করে জেলেরা নদীতে দলবদ্ধভাবে মাছ শিকার করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশের পাশাপাশি কাজ করবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে স্থানীয় একটি দৈনিককে এসব তথ্য জানান।
চাঁদপুরের নদীতে ১ মে থেকে জেলেদের মাছ ধরার প্রস্তুতির মুহূর্তে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, পুরো চাঁদপুর জেলার জলপথ ও স্থলপথ লকডাউনের আওতায় থাকবে। স্থলপথের পাশাপাশি নদীপথেও এক জেলার মানুষ অন্য জেলায় যাওয়া/আসা করতে পারবে না। সে কারণে চাঁদপুরের নদীতে মাছ ধরার জন্য অন্য জেলার জেলে-মাঝি এখানে আসতে পারবে না। আবার এখান থেকেও অন্যত্র যেতে পারবে না কোনো জেলে।
এছাড়া জেলার অভ্যন্তরে এক উপজেলার সাথেও অন্য উপজেলার লকডাউন কার্যকর রয়েছে। ফলে নদীপথে এক উপজেলার জেলে অন্য উপজেলায় আসা/যাওয়া নিষিদ্ধ। স্থলপথের পাশাপাশি নৌপথেও লকডাউন কার্যকরে তৎপর থাকবে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ১লা মে থেকে নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও নদীতে লকডাউন বলবৎ রয়েছে। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যে বা যারা তা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। জেলা/উপজেলা প্রশাসন থেকেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
লকডাউনের মধ্যে নদীতে মাছ ধরা ও পরিবহন করা যাবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, নিজেদের স্বার্থেই সবাইকে লকডাউন মানতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তবে সড়কপথের মতো নদীপথেও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন করতে পারবে নৌযানগুলো।
উল্লেখ্য, করোনার ঝুঁকি মোকাবেলায় গত ৯ এপ্রিল চাঁদপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক। ওইদিন এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ জারি করেন তিনি।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক বলেন, এতদ্বারা জেলার সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড) সংক্রামক ঝুঁকি মোকাবেলায় ’করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি, চাঁদপুর’ এর সভার সিদ্ধান্ত ও সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনাক্রমে এবং ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মুল) ২০১৮ এর ১১(১)(২)(৩) ধারা মোতাবেক’ চাঁদপুর জেলাকে অবরুদ্ধ (লকডাউন) ঘোষণা করা হলো। এ জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ ও প্রস্থান নিষিদ্ধ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সড়ক ও নৌপথে অন্য কোন জেলা হতে কেউ এ জেলায় প্রবেশ করতে বা এ জেলা হতে অন্য কোন জেলায় গমন করতে পারবে না। জেলার অভ্যন্তরে আন্তঃউপজেলা যাতায়াতের ক্ষেত্রেও একইরূপ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হবে।
এতে আরো বলা হয়, ‘সকল ধরনের গণপরিবহন, জনসমাগম পূর্বের ন্যায় বন্ধ থাকবে। তবে জরুরী পরিসেবা যেমন চিকিৎসা, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ইত্যাদি এর আওতা বহির্ভুত থাকবে।’
‘জনস্বার্থে জারীকৃত এ আদেশ ০৯/০৪/২০২০ খ্রিস্টাব্দ তারিখ সন্ধ্যা ০৭.০০টা হতে কার্যকর হচ্ছে। আদেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’ বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। (চাঁদপুর প্রবাহ)
বার্তা কক্ষ, ১ মে ২০২০