আলু বাংলাদেশের প্রধান অর্থকারী সবজি। ভাতের বিকল্প হিসেবে আলুকে বেচে নেয়া যায়। কৃষিবিদদের মতে, আলু দিয়ে প্রায় ৫০-৬০ প্রকারের সু-স্বাদু খাবার তৈরি করে খাওয়া যায়। বিশেষ করে আলুর তৈরি খাবার শিশুদের খুবই প্রিয়। আলু সু-স্বাদু ,মুখরোচক ও শর্করা জাতীয় খাবার । শর্করা জাতীয় খাবার বলেই ভাতের বিকল্প ভাবা যায়।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা আলুর তৈরি বিভিন্ন প্রকার খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে। আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে সপ্তম ও এশিয়ায় তৃতীয় স্থান দখল করে আছে। অথচ রফতানির দিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দেশে আলু উৎপাদিত হয়েছিল ৮০ লাখ টন মে.টন। এর উৎপাদন ২০১৭ বছরে ১ কোটি মে.টনে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু আলুর চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ছে না। দেশের ৩ শ’৯০টি হিমাগার আছে।
এখনো প্রায় ৪০ লাখ মে.টন আলু দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলোতে রয়েছে। চলতি বছরের প্রথমদিকে দেশ থেকে আলু রফতানি হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার মে.টন। হিমাগারে সংকুলান না থাকায় প্রতি বছরই প্রচুর আলু কৃত্রিমভাবে কৃষকরা রেখে থাকে ও তখনই কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয় ।
হিমাগারে থাকা প্রায় ৫৫ লাখ মে.টন টন আলু বাজারে এখন ছেড়ে দেয়া উচিত। কেননা কৃষকদের নতুন বছরের উৎপাদনে নেমে যেতে হবে। মালিক শ্রেণিও বেচে যাবে। কিন্ত বাজারে তেমন চাহিদা না থাকায় তারা দুশ্চিন্তায় আছে। রফতানিও না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষক ও হিমাগার মালিক।
বর্তমানে বাজারে শাক-সবজির দাম বেশি থাকা সত্ত্বেও হিমাগারে সংরক্ষিত আলু অন্যান্য বছরের তুলনায় অত্যন্ত কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজার মূল্য কেজি প্রতি ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির চেয়ে আলুর দাম সবচেয়ে কম ও মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
কৃষকরা কীটনাশক,সার,বীজ,উচ্চ শ্রমমজুরি দিয়ে এ আলু উৎপাদন করে থাকেন । আবার পরিবহন খরচ বহন করে ,ব্যাংক ্লোন পরিশোধ করে, ঘানিব্যাগ কিনে ও হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর ভাড়া দিয়ে যদি লোকসানের মুখে পড়ে তাহলে কৃষকদের বাঁচার উপায় থাকবে না ।
বর্তমানে দেশের রোহিঙ্গা সংকটের অহেতুক অজুহাত দেখিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ীগণ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আলু সে চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতায় কাজ করবে।
সবজি হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যেও সাহায্যকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিবর্গরা আলু বিতরণ বা প্রেরণ করতে পারেন। এতে আলু চাষী ও কোল্ড স্টোরেজগুলোতে সংরক্ষণকারী চাষী বা ছোট ব্যবসায়ী,কোল্ড স্টোরেজ মালিকগণ অন্তত লোকসানের মুখে পড়বে না । সরকারও বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারেন।
(তথ্যসূত্র:জাতীয় দৈনিক)
প্রতিবেদক :আবদুল গনি,সহ-সম্পাদক,চাঁদপুর টাইমস।
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪:২৫ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর,২০১৭,শুক্রবার