শীর্ষ সংবাদ

রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মতলবে ১৭ দিনে ভর্তি ৩ সহস্রাধিক শিশু

রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আইসিডিডিআরবি সূত্র জানিয়েছে,গত ১৭ দিনে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মতলব আইসিডিডিআরবি (কলেরা) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩ সহস্রাধিক শিশু ও বৃদ্ধ। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৭৩ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। এ সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তিনগুণের চেয়েও বেশি।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব শাখা সূত্রে জানা গেছে, এই কেন্দ্রে গত ২০ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত (১৭ দিনে) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৯৫২ শিশু। এর মধ্যে ৫ বছর বয়সী শিশু ২ হাজার ২৫৪। বাকি ৬৯৮ জনের বয়স পাঁচ বছরের বেশি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে ৩৫ দিনে ৫ সহস্রাধিক শিশু ভর্তি হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছিল ১৫৭ জন শিশু। গতবারের তুলনায় এবার ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি। (খবর ইত্তেফাক)

সূত্রটি আরও জানায়, ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ২৬২ জন, ফরিদগঞ্জের ১৯০ জন, হাজীগঞ্জের ১১৬ জন, কচুয়ার ১১৭ জন, হাইমচরের ৩৩ জন, মতলব উত্তরের ১০৭ জন, মতলব দক্ষিণের ১০৩ জন, শাহরাস্তির ৯৬ জন, কুমিল্লার দাউদকান্দির ১৩৩ জন, দেবিদ্বারের ১৩৫ জন, লাকসামের ১৪৬ জন, মুরাদ নগরের ১৪৩ জন, লক্ষ্মীপুর সদরের ১৭৯ জন, রায়পুরের ৯৫ জন, রামগঞ্জের ৮৩ জন, নোয়াখালীর চাটখিলের ৩৪ জন, কুমিল্লার চান্দিনার ১৩০ জন, হোমনার ৪১ জনসহ বিভিন্ন উপজেলার শিশু ও বৃদ্ধ এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

শুক্রবার সরেজমিনে আইসিডিডিআরবির মতলব শাখায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

আইসিডিডিআরবির মতলব শাখার প্রতিষ্ঠান প্রধান ডা. ফজল খান বলেন, এ হাসপাতালে ৬০ জন ডায়রিয়া রোগীর আসন রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক শিশুর চিকিৎসা করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও এ সেবা কার্যক্রম আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। দুর দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকগণসহ সকলে সহযোগিতা করছেন। আমাদের এ হাসপাতালের ডায়রিয়া চিকিৎসার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোতে এ চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে জনসাধারণ উপকৃত হবে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও সকলে সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়ি ফিরছেন। এখন পর্যন্ত কোনো শিশু মারা যায়নি।

আইসিডিডিআরবির মতলব শাখার জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা চন্দ্রশেখর দাস বলেন, দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার গ্রহণই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ। শীতের শুরুতেই শিশুরা ব্যাপক হারে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত ছয় মাস বয়সী শিশুদের পরিমাণ মতো খাবার স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খেতে দেওয়া হচ্ছে। সাত মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের দেওয়া হচ্ছে খাবার স্যালাইন, বুকের দুধ ও প্রতিদিন একটি করে বেবি জিংক। সঙ্গে খেতে দেওয়া হচ্ছে সুজি, খিচুড়ি, ডাব জল, চিড়ার পানি ও ভাতের মাড়সহ অন্য খাবার। এই রোগ এড়াতে দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার বর্জন করতে হবে। শিশুদের ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হলে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে।

বার্তা কক্ষ,ডিসেম্বর ৭, ২০১৯

Share