চাঁদপুরে সাড়ে ৭ বছরের শিশু উম্মে জামিলা ৩০ রোজা পালন ও কোনআন তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে ৩০ পাড়া কোনআন খতম করে, এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাকে পরিবারের পক্ষ থেকে ও আত্বীয়-স্বজনরা ঈদের পূর্বে ও ঈদের পর দিন শনিবার, রোববার দিনভর অনেকে তাকে নগদ বকশিস ও বিভিন্ন পোশাক উপহার দিয়েছে। এ রোজা রাখা ও ৩০ পারা পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করতে পারায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েকটি পোশাক উপহার দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
উম্মে জামিলার সাথে কথা বলে বিভিন্ন কথা বলার এক পর্যায়ে সে জানান,এ রোজা রাখায় বেহেস্ত পাওয়া,কবরের আগুন থেকে সে নিজেও তার আত্বীয় স্বজন যারা কবরবাসী হয়ে গেছে তারা সে আগুন থেকে রক্ষা পাবে। এ ছাড়া দুনিয়ার সকল সমস্যা থেকে খোদা রক্ষা করবেন এবং আল্লাহ এ রোজা রাখায় শেষ বিচারের দিনে নিজ হাতে রোজাদারকে প্রতিদান দিবেন।
সে মাদ্রাসার শিক্ষকের কাছে শুনেছেন বলে জানান ।
সে জন্য সে ৩০টি রোজা,৩০ পারা কোনআন তেলোয়াতের মধ্যদিনে কোন খতম করা ও প্রতিদিন ফজর নামাজ থেকে শুরু করে ৫ ওয়াক্ত নামাজ,তারাবি নামাজ আদায় করেছেন পবিত্র এ রমজান মাসের ৩০টি দিনই। মাঝে মধ্যে ফজরের নামাজের পূর্বে নফল নামাজও আদায় করেছেন বলে জানা গেছে।
তার পিতা চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের জামিলা এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধিকারী, প্রানের এক জন পরিবেশক,মোহাম্মদ হাসান আলী মজুমদার ( সেন্টু),মাতা মিসেস শান্তা বেগম। সে পালবাজারের আলী স্টোরের সত্ত্বাধিকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুক্তিযুদ্বে অংশগ্রহনকারী প্রয়াত মোহাম্মদ হযরত আলীর নাতনী। শিশু উমো¥ জামিলা চাঁদপুর শহরের আল-আমিন একাডেমিতে গত বছরে শিশু শ্রেনীতে অধ্যায়নরত ছিলেন। পরে তাকে ২০২০ সালের লকডাউনের পূর্বে শহরের গুয়াখোলা রোডস্থ রওজাতুল উলুম মহিলা মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে ভর্তি করা হয়। সে এখন সে মাদ্রাসার একজন হেফজো বিভাগের ছাত্রী।
তাকে পরিবারের অনেকের পক্ষ থেকে রোজা না রাখার জন্য বারন করলেও সে আল্লাহকে খুশি করার জন্য সাহসের সাথে মাহে রমজানের ৩০টি রোজা রেখেছে। সে শিক্ষকদের কাছ থেকে শুনেছে, মৃত্যুর পর কবরের আজাব,শাস্তি ও কবরের আগুনের কথা শুনে, পরকালে দিকে তাকিয়ে এ রোজা রাখতে নিজ থেকে বাধ্য হয়েছে। তাকে কেউ রোজা রাখতে বলতে হয়নি।
তার পিতা মোহাম্মদ হাসান আলী মজুমদার ( সেন্টু),জানান, আমার মেয়ের উম্মে জামিলার জন্মের সময় তার মা’ ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হওয়ায় ২০ মিনিট তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ছিল। সকলের মধ্যে তখন কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়।
সকলের ধারনা ছিল জামিলার মা’ শান্তা আর বুঝি নাই। ঐ সময় এ খবর চাঁদপুর শহরের প্রিমিয়ার হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক বিষয়টি শুনে ডাক্তার মোবারক হোসেন চৌধুরী অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে বিশেষ পদ্বতি ব্যবহার করে এসস্পান্স,করতে করতে আল্লাহ্র অশেষ রহমতে ২০মিনিট পড়ে (হার্ড) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া চালু হওয়ায় সে পূর্ন জীবন ফিরে পান। পরে মারাত্বক অসুস্থ্যতার মধ্যে ঢাকাস্থ স্কায়ার হাসপাতালে দীর্ঘ দিন চিকিৎসার পর সে এখন স্বাবিক জীবন যাপন করতে পারছে।
সে কারনে মেয়েকে আল্লাহ্ পথে চলার জন্য কোরআন শিক্ষা অর্জন করে হাফিজা করার ইচ্ছায় মাদ্রাসায় পড়তে দিয়েছি। এছাড়া জামিলা শুনেছে তার দাদা,আমার পিতা মরহুম মোহাম্মদ হযরত আলী আমাদেরকে ছোট রেখে মারা যান। সে জন্য দাদাকে আল্লাহ যেন বেহেস্তবাসী করে সে কথা মনে লালন করে সে ৩০টি রোজা রাখা, ৩০ পারা কোরআন তেলোয়াত ও ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছে।
রোজার প্রতিদান সম্পর্কে সে দাদীর নিকট জানতে চাইলে মা তাকে বলেন, রোজার প্রতিদান পুরস্কার মহান আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন। এতে আমার মেয়ে আল্লাহ্ প্রতি আরো বেশী বিশ্বাস অর্জন হয়ে যায়। উম্মে জামিলা খোদাকে পাওয়ার ইচ্ছায় আগামীতে আরো বেশী বেশী কোরআন তেলোয়াত ও রোজা রাখার ইচ্ছা পোষন করেছে ।
সে যেন আগামীতে আরো ভাল ভাবে কোরআন শিখতে পারে,রোজা রাখতে পারে এ জন্য আমি সকল আত্বীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব ও পাঠকের নিকট তার জন্য দোয়া চাচ্ছি। আপনারা তার জন্য একটু দোয়া করার জন্য সকলের নিকট অনুরোধ জানাই।
স্টাফ করেসপন্ডেট