চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগীদের অনায়াসে বাইরে চলাফেরা ঠেকাতে হাসপাতালে ১২ জন আনসার সদস্যকে সিকিউরিটি হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
৩১ জুলাই শনিবার সকালে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে এবং কয়েক গেটে এ ১২ জন আনসার সদস্যকে ডিউটি পালন করতে দেখা যায়।
খবর নিয়ে জানা গেছে,শিক্ষা মন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনির ভাই ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাক্তার জেআর ওয়াদুদ টিপু অর্থায়নে এ ১২ জন আনসার সদস্যকে হাসপাতালের নিয়োগ প্রদান করা হয়।
এদিকে হাসপাতালের জনবল সংকট হওয়ায় ঠিকমত সিকিউরিটি গার্ড না থাকার কারণে এতদিন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল এলাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগী এবং রোগীর সাথে থাকা স্বজনরা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস -পত্র ক্রয় করতে কিংবা মসজিদে নামাজ পড়তে ওয়ার্ড থেকে প্রতিনিয়ত বের হয়েছেন।
আবার করোনা আক্রান্ত অনেক রোগী ও রোগীর স্বজনরা সিগারেট খাওয়ার জন্য হাসপাতাল প্রাঙ্গণের বিভিন্ন দোকানে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। এ বের হওয়ার সুযোগে তারা নিরবেই সাধারন মানুষের সাথে মিশে যাচ্ছেন।
এজন্য করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং রোগীর স্বজনদের মাঝে সচেতনতা না থাকায় সাধারণ মানুষ নিজেদের অজান্তেই তাদের সংস্পর্শে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যার ফলে দিন দিন এই চাঁদপুরে করোনা সংক্রমনের বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইতিমধ্যে সরকারি এ হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার আইসোলেশন ওয়ার্ড ছাড়িয়ে তৃতীয় তলাকেও আইসোলেশন ওয়ার্ডের আওতায় আনা হয়েছে। গত দু’দিন ধরে খবর নিয়ে জানা গেছে হাসপাতালের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলার আইসোলেশন ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দায় এবং করিডোরে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতামত সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি না হলে চাঁদপুরে করোনার ভয়াবহতা কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় তা বলা মুশকিল।
সদর হাসপাতাল এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের এমন খোলামেলা চলাফেরা নিয়ে চাঁদপুর কালেক্টরেট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশারফ হুসাইন চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন। তিনি তার পোস্টে বলেন, যে, দু,তলা,তিন তলা এমনকি চুতর্থ তলায়ও করোনা প্রজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন।
তাই তারা যেন বের হতে না পারে সে ব্যাপারে গার্ডের ব্যবস্থা করলে চাঁদপুরের জনসাধারণের জন্য মুক্তির পথ হবে। আর প্রতিটি রোগীর সাথে একজন ব্যতীত কাউকে করোনা প্রজেটিভ রোগীর কাছে যেতে না দেয়ার আইন করা একান্ত প্রয়োজন।
বিশেষ করে চাঁদপুর শহরের মধ্যে কালেক্টরেট জামে মসজিদটি করোনা প্রজেটিভ রোগীর কারণে হুমকির মুখে রয়েছে। এবং সাধারণ মুসল্লি এখানে নামাজ পড়তে অনিহা বোধ করছে।
তাই এ সমস্যার সমাধান করার জন্য মান্যবর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং রোগীর স্বজনরা অনায়াসে এমন বাহিরে চলেফেরা নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, হাসপাতালে নিয়মিত সিকিউরিটি গার্ড না থাকার কারণে এতদিন করোনায় আক্রান্ত রোগী এবং রোগীর স্বজনরা প্রতিনিয়ত বাইরে চলাফেরা করেছেন। যার কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তারই প্রেক্ষিতে বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু অর্থায়নে শনিবার থেকে ১২ জন আনসার সদস্যকে হাসপাতালে ডিউটি করার জন্য প্রদান করেন। করোনা সংক্রমণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা নিয়মিত ডিউটি করবে বলে জানান এ চিকিৎসক।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি,১ আগস্ট ২০২১