রেললাইন থেকে কমপক্ষে ৫০ গজ দুরত্বে বসতবাড়ি বা হাটবাজার বসানোর নিয়ম থাকলে তা গড়ে ওঠেছে দুই গজেরও কম দুরত্বে। এতে করে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে মানুষের জীবন, ট্রেনও চলছে চরম ঝুঁকি নিয়ে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিমানবন্দর স্টেশন। প্রায় ৩০ মিনিটের এই রেলপথের দুই পাশে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য অস্থায়ী বসতি ও কাঁচাবাজার। বাজার-বসতির জন্য দেখা যাচ্ছে না রেলরাইন।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে কমলাপুর থেকে জামালপুরগামী তিস্তা এক্সপ্রেসে করে বিমানবন্দর স্টেশনে যাওয়ার পথে রেললাইনের দু’পাশে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রেন ছাড়ার প্রথমেই চোখে পড়ে রেল লাইনের পাশে গড়ে ওঠা শাহজাহানপুর বস্তি। এরপর মালিবাগ রেলগেট ও খিলক্ষেতসহ লাইনের দুই পাশে গড়ে ওঠেছে অবৈধ বস্তি ও হাট বাজার। আর এসব স্থাপনার কারণে প্রতিনিয়িত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন ও মানুষ।
সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়া এই ট্রেন ৮টা ০৮ মিনিটে বিমানবন্দর রেল স্টেশনে পৌছায়। রেললোইনের দুই পাশ শুধু স্থাপনাই নয়, চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে মাথায় বোঝা নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে লোকজনকে রেললাইন পারাপার হচ্ছেন। ট্রেন আসছে এরকম কোনো খেয়ালই নেই তাদের মধ্যে।
এছাড়া দুই-তিন হাত ব্যবধানে রেল লাইনের পাশে বা লাইনের উপরে দাঁড়িয়েই হকাররা জিনিসপত্র বিক্রি করছে। কোথাও কোথাও ৩/৪ বছর বয়সী শিশুরা চলন্ত ট্রেনের পাশে কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার পথে তেজগাঁ এলাকায় সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা চোখে পড়ে। রেল লাইনের দু’পাশে বস্তি-বাজার গড়ে ওঠার কারণে এই লাইনগুলোকে দেখে অনেকটা পতিত বলে মনে হবে। বস্তির ঘরগুলো লাইনের ২/৩ হাতের বেশি দুরত্ব হবে না। রেল লাইনের ধারেই গড়ে ওঠেছে বিশাল কাঁচাবাজার।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) রেলগেট এলাকায় ট্রেন আসলে চালক একে শিকদার বলেন, এখানে রেল দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাওয়ার কারণে, এই বাজারটা সরকার উঠিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু এরপর আবার বসা শুরু হযেছে। বস্তিগুলোও উচ্ছেদ করা হয়েছিলো। কিন্তু কিছুদিন পর পুনরায় ঘর তৈরি করা হয়। এখন দেখে মনে হচ্ছে, কোনো কালেই এখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি।
তিনি বলেন, ‘একটা দুর্ঘটনা ঘটলে ট্রেন চালকের দোষ। কিন্তু মানুষ তো তার নিজের জীবনে মায়া করে না। আমাদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চালাতে হয়। রাজধানীর ভেতরে বেশি গতিতে ট্রেন চালানোও যায় না’।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, রেল লাইনের পাশে বস্তি বা বাজারের আড়ালে মাদকসহ নানা অপরাধ পরিচালনা করা হয়। ট্রেনে করে এসব মাদকদ্রব্য আনা-নেওয়া করা হয়। তবে এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান রেল চালকরা।
সহকারী ট্রেনে মাহমুদুন-নবী বলেন, ‘নিয়মানুসারে রেল লাইন থেকে কমপক্ষে ৫০ গজ দুরে বসতবাড়ি বা হাট বাজার থাকতে পারে। তবে আমাদের এখানে নিয়ম কেউ মানছে না। বস্তি উচ্ছেদ করলেও আবার এসে বসবাস করছে। আমাদের দেখে শুনে চালাতে হয়’। (বাংলানিউজ)
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:২০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ