নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানার আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ জন। বিষয়টি জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। অনেক শ্রমিকের এখনও খোঁজ না মেলায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় ছয়তলা ভবনের চারতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ চারতলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেনি। প্রতিদিন ৪ তলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রহিমা, রিপন, কম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০-৮০ জন শ্রমিকের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা কারখানার সামনে এসে ভিড় করেছেন আপনজনের সন্ধানে। কারখানার সামনে নিখোঁজ স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারখানার চারতলার ভবনের আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। তাছাড়া ধীরে ধীরে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়েও পড়ছে। কারণ ভবনের পঞ্চমতলায় ছিল কেমিকেলের গোডাউন।
ঘটনাস্থলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাইন বিল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে শ্রমিকদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা এবং আহতদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তীতে এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনে আরও সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ করছে। শুক্রবার ভোরের দিকে আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু সকালে ভেতরে আবার আগুন বেড়ে যায়। আমরা নেভানোর চেষ্টা করছি।”
সকাল সোয়া ১০টার দিকেও ছয় তলা কারখানা ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার সামনের দিকে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
সজীব গ্রুপের এ খারখানার ওই অংশে সেমাই কারখানা ও গুদাম এবং কার্টনের গুদাম রয়েছে। এছাড়া নিচের ফ্লোরগুলোতে সেজান জুসসহ কোমল পানীয় এবকং খাদ্যপণ্য তৈরি হত বলে কর্মীরা জানিয়েছেন।
রূপগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত বলেন, “কারখানার শ্রমিক নিখোঁজ থাকার তথ্য আসছে। তবে কতজন নিখোঁজ, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।”