প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চাঁদপুরে শুরু হওয়া ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি সোমবার (২৭ মে) রাত পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক লাইনে গাছপালা উপড়ে পড়ায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
জানা গেছে, গতকাল রাত থেকেই উপজেলাগুলোতে বিদ্যুৎ ছিল আসা-যাওয়ার মাঝে। জেলা শহরে ভোররাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক থাকলেও ভোররাত থেকে শহর এবং বিভিন্ন উপজেলার বেশির ভাগ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার নয়ারহাট গ্রামের বাসিন্দা কেএম নজরুল ইসলাম বলেন, রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শুরু হওয়া প্রচণ্ড বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আমরা।
পশ্চিম রুপসা গ্রামের টেলু মিয়া বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে প্রচণ্ড বাতাস বইছে। রোববার রাত থেকে এখন সোমবার সন্ধ্যা, বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা।
মনতলা গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জয় বলেন, রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। তবে মধ্যে একবার বিদুৎ এসেছিল। পরে আবার বাতাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় চলে যায়।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, বৃষ্টি ও প্রচণ্ড বাতাসে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছপালার ডাল ভেঙে বিদ্যুৎ সংযোগের ওপর পড়ে। একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। তাই এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আতিকুজ্জামান চৌধুরী বলেন, রোববার রাত থেকেই ঝড়ো হাওয়ায় বিদ্যুতের সংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে সংযোগ সচল করতে কাজ শুরু হবে। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-১ এর আওতায় কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ গ্রাহক রয়েছেন। এদের মধ্যে ২ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-২ এর জেনারেল ম্যানেজার রাশেদুজ্জামান বলেন, রোববার দিবাগত রাত ৩টা থেকে বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে সংযোগ সচল করতে কাজ শুরু হবে। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-২ এর আওতায় চাঁদপুর সদর, হাইমচর, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর এবং দক্ষিণ উপজেলায় ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৪৭৫ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা আবহাওয়া বিষয়ক কর্মকর্তা শাহ্ মো. শোয়াইব জানান, সোমবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে দুপুর ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুর ২টা ৩২ মিনিট থেকে ২টা ৩৫ ঘটিকায় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩১ নটিক্যাল মাইল বা ৫৭ কিলোমিটার। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে।
প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম, ২৮ মে ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur