বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিসহ অর্থ পাচারের আট দফা অভিযোগে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত।
প্রতিটি অভিযোগের জন্য মায়ার চার থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার আদালত এই দণ্ডাদেশ দেন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এই চুরিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার চুরির ঘটনা বলে মনে করা হয়। এ চুরিতে প্রথম সাজা পেলেন মায়া। কারাদণ্ডের পাশাপাশি মায়াকে ১০৩ মিলিয়ন ডলারের অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনে। পরে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের মাকাতি শাখার মাধ্যমে তা ক্যাসিনো ও বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে চলে যায়। অর্থ পাচারের এই কাজে আরসিবিসির মাকাতি শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে সরাসরি জড়িত ছিলেন মায়া সান্তোস দেগুইতো।
ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের আরসিবিসি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসার পর তা মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে।
সিএনএন ফিলিপাইনের প্রতিবেদনে বলা জয়, মায়া সান্তোস দেগুইতো যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে অর্থ আনা এবং তা চারটি অজ্ঞাত ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে জমা করার বিষয় নিজে তদারকি করেছিলেন বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।
ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের আরসিবিসি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসার পর তা মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এভাবে হাতবদল হয়ে সবশেষে ফিলরেমের মাধ্যমে ওই আট কোটি ডলার ফিলিপাইন থেকে আবার অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়। এতে ওই ব্যাংকের তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পায় ডিওজে। এ জন্য আরসিবিসি থেকে বরখাস্ত হন তিনি। গত বছরের আগস্টে ফিলিপাইন সরকার তাঁকে এ কারণে গ্রেপ্তারও করে। মায়া সান্তোস দেগুইতো সব সময় অর্থ পাচারের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছেন। তাঁর দাবি, আরসিবিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁকে কিছু কাজ করতে হয়েছে।
আদালত আজ ২৬ পৃষ্ঠার রায়ে বলেন, ‘অর্থ লেনদেনে তাঁর কিছুই করার ছিল না বলে মায়া আদালতে যে কথা বলেছেন, তা একেবারে নির্জলা ও বড় ধরনের মিথ্যা।’
তবে মায়ার আইনজীবী ডেমি কাস্টোডিয়ো এই রায়ের পর জানিয়েছেন, তাঁরা রায়ে হতাশ। এ বিষয়ে মায়া উচ্চ আদালতে যাবেন। (প্রথম আলো)
বার্তা কক্ষ
১০ জানুয়ারি, ২০১৯