ফরিদগঞ্জে ১ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের দাবিতে হাহাকার করছে সাধারণ মানুষ! বর্ষাকাল এলেই তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলছে এ অবস্থা। উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডের প্রদান সড়ক এটি। এই কাঁচা সড়কটি কড়ৈতলী বাজার হতে পাটোয়ারী বাজার অভিমুখী একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় থাকায় প্রায় ৫টি গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বর্ষা মৌসুমে রাস্তা গুলো পানি-কাঁদায় একাকার হয়ে যায়। এমন দুরবস্থার জন্য যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হাটাও অসম্ভব হয়ে পড়ছে। মনে হয় রাস্তাটি চাষের জন্য প্রস্তুত করা কোন জমি। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় কাদাঁ মাড়িয়ে চলাচল করতে হয় গ্রামের হাজারো মানুষের। হাতে জুতা, পানি-কাঁদা মাখা শরীরে চলে শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার লোকজন।

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মাত্র ১ কিলোমিটার সড়ক পাকা হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে ৩টি মাদ্রাসার, ৩টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে এবং প্রতিদিন তিন থেকে চারটি বাজারে যাতায়াত করে অর্ধশত ব্যবসায়ী। এছাড়াও ক্রেতা ও বিক্রেতাসহ ৫ গ্রাামের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বর্তমানে বেহাল দশা। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার উপায় থাকে না।

স্থানীয়রা দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণে এলজিইড এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যে ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন। ভোটের সময় অনেক জনপ্রতিনিধিরা এলাকার দুঃখ দুর্দশা লাঘবে সড়ক নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দিলেও কখনোই সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নেই। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী একটি রাস্তার জন্য বিভিন্ন মহলের কাছে আবেদন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে ওই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়, কড়ৈতলী আলীম মাদ্রাসা, পাইকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, সাছিয়াখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাছিয়াখালী মাদ্রাসা, উত্তর শাশীয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর শাশীয়লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ শাশিয়ালী এম এ বারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরো কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি।

এছাড়া ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজ চান্দ্রা কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াতে এ সড়কটি ব্যবহার করে। পাটোয়ারী বাজার, কড়ৈতলী বাজার ও শাহী বাজার সহ কয়েকটি বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়।

এলাকাবাসী জানান, ‘কোনো চেয়ারম্যান এবং মেম্বার সড়কটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেননি। শুধু ভোটের সময় ঘনিয়ে আসলে সড়কটি পাকা করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে সড়কটি করে দেওয়ার আশ্বাস শোনা যায়। কিন্তু ভোট চলে গেলে তাদের আর খবর থাকে না।’

ওই এলাকার আনছার বিডিপির কমান্ডার রফিক কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক বলেন, ‘এই সড়ক পাকা করনের জন্য বহু রাজনৈতিক নেতাকর্মীর কাছে গিয়েছি, সবাই আশ্বাস দিয়েই গেছে। এছাড়াও উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যোগাযোগ করেছি এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির পাকা করনের জন্য কিন্তু কোন সাড়া পাইনি।’

এবিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কল দিয়েও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৫ অক্টোবর ২০২১

Share