প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্রেমলিন-সমর্থিত হ্যাকারদের হস্তক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়ার ৩৫ জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির মতে, এ কূটনীতিকরা মূলত গুপ্তচর বা গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
ওয়াশিংটনে রাশিয়ান দূতাবাস ও সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত কনস্যুলেটে কর্মরত ওই কূটনীতিকদের যুক্তরাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত বা ‘পারসনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে।
তাদেরকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আরও ঘোষণা দিয়েছেন যে, রাশিয়ান সরকারের মালিকানাধীন দু’টি ভবনও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
নিউ ইয়র্ক ও ম্যারিল্যান্ডের ওই ভবন দু’টি গোয়েন্দা কার্যক্রমে ব্যবহৃত হতো। এ খবর দিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।
খবরে বলা হয়, রাশিয়ার জিআরইউ ও এফএসবি গোয়েন্দা সংস্থা এবং ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন ওবামা। এ ছয় ব্যক্তির মধ্যে রয়েছেন জিআরইউর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল করোবভ, তার তিন ডেপুটি। এ তালিকায় রয়েছেন আলেক্সেই বেলান ও ইয়েভজেনি বোগাচেভ নামে দুই রাশিয়ান, যাদের ওপর সাইবার অপরাধের অভিযোগে দীর্ঘদিন এফবিআই’র পরোয়ানা ঝুলছে।
নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে তিনটি কম্পিউটার কোম্পানি, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে জিআরইউকে সহায়তা দেওয়ার।
ওবামা বলেছেন, বহিষ্কৃত ৩৫ জন কূটনীতিক আসলে গোয়েন্দা কর্মী। লন্ডনে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস একে ‘শীতল যুদ্ধকালীন দেজা ভু’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক ধ্বংস করতে চায়।
ওবামা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। বলেছেন, রাশিয়ার কর্মকান্ডে প্রত্যেক আমেরিকানের সতর্ক হওয়া উচিৎ। তিনি আরও মন্তব্য করেছেন, যে হ্যাকিং হয়েছে, তা কেবলমাত্র রাশিয়া সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনাতেই সম্ভব।
ওবামা বলেন, আমরা প্রকাশ্যে ও একান্ত আলোচনায় রাশিয়া সরকারকে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও, এমন কান্ড ঘটিয়েছে দেশটি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাশিয়ার আক্রমণাÍক কর্মকান্ডের জবাবে আমাদের প্রতিক্রিয়া এখানেই শেষ নয়। আমরা আমাদের পছন্দসই সময় ও স্থানে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখবো। এগুলোর কিছু কিছু হয়তো প্রচার করা হবে না।
এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এবার হয়তো রাশিয়া সরকার নিজ কর্মকান্ডের যথার্থতা পুনর্বিচার করবে। তবে বহিষ্কৃতদের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসল্যাককে রাখা হয়নি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার হ্যাকিং-এর প্রমাণ শুনতে তিনি আগামী সপ্তাহে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশের সামনে আরও বড় ও ভালো কিছু করার সময় এসেছে।
কিন্তু এরপরও আমাদের দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থের কথা চিন্তা করে আমি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসবো। এ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য সম্পর্কে অবহিত হবো।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৩ : ০০ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ শুক্রবার
ডিএইচ