জাতীয়

রামপালে পাঁচ লাখ গাছ লাগানো হবে : প্রধানমন্ত্রী

যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার(১৩ অক্টোবর) রাজধানীতে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

পরিবেশ সুরক্ষায় সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে পাঁচ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

‘দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে হলে, কৌশলসমূহ বলতে হবে’ এই স্লোগান নিয়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৬। দিবসটি উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সারা দেশে নির্মিত ১০০ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র এবং ৫৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় নতুন নতুন কৌশল খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে এত আন্দোলন-এত কথা, সেখানে পাঁচ লক্ষ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টি করার জন্য এবং কার্বন সিংকের জন্য। কাজেই আমাদের বাঁচার একমাত্র পথ ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাওয়া- বাংলাদেশকে সবুজ বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে ফেলা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য যেকোনো দুর্যোগ আসবে সেই দুর্যোগকে আমাদের সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে এবং দুর্যোগ থেকে মানুষকে আমাদের বাঁচাতে হবে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ আসবে, দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে এবং যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের জনগণ সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। আগামীতে কখনো এই বাংলাদেশের মানুষ যেন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যবস্থা অবশ্যই আমরা নেব।’

শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশ দূষণে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকার কারণে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি।

সাম্প্রতিককালে বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বজ্রপাত মোকাবিলায় আরো বেশি তালগাছ রোপণের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে সংবাদ সংস্থা বাসসের এক সংবাদে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিশ্বব্যাপী যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলার পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গ্রহণ করা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুতে ক্ষতিগ্রস্ত মো. শহীদুল আলম ও গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মাসুদা বেগম দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার নিজস্ব অভিজ্ঞতা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেশের বিভিন স্থানে নবনির্মিত ১৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘ঝড়, বন্যা আমাদের দেশে লেগেই থাকে। আমি এটুকু বলব- উত্তরবঙ্গের মঙ্গা আমরা দূর করেছি। এখন নদী ভাঙন ও বন্যা থেকে আমাদের জনগণকে রক্ষা করার জন্য নির্দেশ হচ্ছে-যেসব ঘরবাড়ি করা হচ্ছে তা একটু উঁচু করে নির্মাণ করতে হবে। মানুষের যেন ক্ষতি না হয় সেটা দেখা হবে।’

প্রত্যেক জেলাতেই আমরা আগাম টিন এবং ত্রাণ সাহায্য জেলা প্রশাসকদের কাছে দিয়ে রেখেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা যেন কোনো আকস্মিক দুর্যোগ এলে তৎক্ষণাৎ তা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে পারেন।

তা ছাড়া এই বন্যা থেকে লোকজনকে রক্ষার জন্য আমরা ভবিষ্যতে পাকা দালান করে দেব। যদিও এখন টিনের ঘরবাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে- বাংলাদেশে আর একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না-এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত এবং ইনশাল্লাহ আমরা তা করব।’

নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৭:০২ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
এইউ

Share