ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে স্পষ্টতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। নিজেদের দেশে ‘হোম অব ক্রিকেট’ এর উইকেটের সুবিধা মোটেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। অন্যদিকে যথাসম্ভব উইকেটের বাস্তবতা মেনেই বোলিং-ব্যাটিং করে গেছে শ্রীলঙ্কা। যে কারণে দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়িয়েছে ৩১২ রানের! দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২০০ রান।
প্রথম ইনিংসে ১১২ রানে এগিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কা আজ শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত রান তুলতে থাকে। এই উইকেটে দ্রুত রান তোলাই সেরা ডিসিশন। দলীয় ১৯ রানে কুশল মেন্ডিসকে (৭) এলবিডাব্লিউ করে ব্রেক থ্রু এনে দেন রাজ্জাক। ওয়ানডে স্টাইল ব্যাটিংয়ে ২৪ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে বোল্ড করে দেন তাইজুল। এরপর গুনাথিলাকা (১৭) শিকার হন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানের।
একপ্রান্ত আগলে প্রবল ধৈর্য্যের পরিচয় দিচ্ছিলেন ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে। তাকে ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি করেন মেহেদী মিরাজ। করুনারত্নের ১০৫ বলে ৩২ রানের ইনিংসটিতে একটিও বাউন্ডারির মার ছিল না! অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালকেও (৩০) এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। পরের বলেই ডিকাভেলার বিপক্ষে জোরালো আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে সে যাত্রায় বেঁচে যান ডিকাভেলা। তবে তাকে ১০ রানেই মাহমুদ উল্লাহর তালুবন্দি করেন তাইজুল।
এরপর মঞ্চে আবির্ভাব ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানের। পরপর দুই বলে দিলরুয়ান পেরেরা (৭) এবং আকিলা ধনাঞ্জয়াকে (০) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান তিনি। দুজনই উইকেটকিপার লিটন দাসের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তবে হ্যাটট্রিক হয়নি তার। এক বল পরে সুরঙ্গা লাকমাল ফিরতে পারতেন। কিন্তু সাব্বির রহমানের বদান্যতায় জীবন পান তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রোশেন সিলভা। দিনশেষে ৯৪ বলে ৯৮ রানে অপরাজিত তিনি। সঙ্গী সুরঙ্গা লাকমাল অপরাজিত ৭ রানে।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে করা ২২২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১১০ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। মাত্র ৪৫.৪ ওভার খেলতে পেরেছে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের দল। ৪ উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের শুরুতেই ভালো খেলতে থাকা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাসকে (২৫) বোল্ড করে দেন সুরঙ্গা লাকমাল।
মেহেদী মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু পারেননি। ৪৬ বলে ১৭ রান করা টাইগার অধিনায়ককে বোল্ড করে দেন ধনাঞ্জয়া। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। এই টেস্টে দলে ফেরা সাব্বির রহমান ৩ বলে ‘ডাক’ মেরে আউট হয়ে যান। একসময়ের হার্ডহিটার খ্যাত অভিজ্ঞ স্পিন জাদুকর আব্দুর রাজ্জাকও দীর্ঘদিন পর সুযোগ পেয়ে রান করতে পারেননি। ধনাঞ্জয়ার বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন মাত্র ১ রান।
সবার ব্যর্থতার মাঝে একপ্রান্ত আগলে লড়াই করছিলেন তরুণ অল-রাউন্ডার মেহেদী মিরাজ। এর মধ্যেই বোকার মত রান-আউট হয়ে যান তাইজুল ইসলাম। পরের বলেই মুস্তাফিজকে (০) বোল্ড করে দেন দিলরুয়ান পেরেরা। ১১০ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ৭৮ বলে ৩৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মেহেদী মিরাজ। এটাই বাংলাদেশের ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের শেষভাগে বাংলাদেশের যে ৪টি উইকেট গিয়েছে তাতে বোলারের কৃতিত্বের চেয়ে ব্যাটম্যানের দায় বেশি। দলীয় ৪ রানে ওভারে সুরঙ্গা লাকমালের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান তামিম ইকবাল (৪)। পরের ওভারেই দৃষ্টিকটুভাবে রান-আউট হয়ে যান চট্টগ্রাম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক (০)। দলীয় ১২ রানে সেই লাকমলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম (১)।
(এমটি নিউজ)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫: ৫০ এ.এম, ০৯ ফেব্রুয়ারি২০১৮,শুক্রবার ।
এএস.