রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না : বিএনপি

সংসদে বাইরে থাকা প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি জানিয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না বললেই চলে। বুধবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এই কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, পর পর দুবার অর্থমন্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতার ওপর আস্থা রেখে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা সফল হবে বলে আশা পোষণ করেছিলেন। কিন্তু তাকে আশাভঙ্গের কষ্ট পোহাতে হয়েছে।

রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থ হলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কী করবেন এ নিয়েও মন্তব্য করেছে বিএনপি। ফখরুল তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী কী করবেন। পূর্ববর্তী অর্থবছরগুলোর মতো তাকে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রায় নিম্নমুখী সংশোধন করতে হবে। নিম্নমুখী সংশোধনের মানে হল ব্যয় কাটছাঁট করা। কোথায় তিনি কাটছাঁট করবেন? শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার মতো কল্যাণমুখী খাত থেকে নাকি মানবকল্যাণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় এমন কোনও খাত থেকে?’

তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী রাজস্ব সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে উচ্চাভিলাষী। কিন্তু সেই অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থাপনা ও কৌশল নির্ধারণে তাকে যত্নশীল হতে দেখি না। বাংলাদেশে যথাযত নীতি ও কৌশল গ্রহণ করলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বর্তমানের চাইতে দ্বিগুণ করা সম্ভব। বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১১ শতাংশের অঙ্কে স্থিত হয়ে আছে। এই অনুপাত বাড়াতে পারলে জনকল্যাণমুখী অনেক প্রকল্প ও কর্মসূচী বাস্তবায়ন সম্ভব। দুর্বলতা স্বীকার না করলে সমস্যা সমাধানের পথও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

ফখরুল দাবি করেন, অর্থমন্ত্রী ধমকের সুরে দুর্বলতা ঢাকতে চান। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।

লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে যেভাবেই কর আরোপের চিত্র দেখানো হোক না কেন বাস্তবে মানুষকে অতিরিক্ত করের বোঝা বহন করতে হবে। এর বিনিময়ে জনগন কী পাবে সেটি স্পষ্ট করা হয়নি।

বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত বাজেটের কর কাঠামোর দিকে লক্ষ্য করলে স্পষ্টই বোঝা যায় আমাদের কর কাঠামো পরোক্ষ করনির্ভর, অর্থাৎ ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক নির্ভর। অর্থমন্ত্রী ‘প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন, ও সমতাভিত্তিক সমাজ’ প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রযাত্রার অঙ্গীকার নিয়ে যে বাজেট ঘোষণা করেছেন সেটি পরোক্ষ কর নির্ভর হওয়ার ফলে সমতা অর্জনে প্রণিধানযোগ্য কোনও ভূমিকা রাখবে না।

বাণিজ্য উদারিকরণ ও বিভিন্ন বিশ্ব সংস্থার সঙ্গে চুক্তির ফলে আমদানি শুল্কের উপর ক্রমান্বয়ে নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে। ফলে ভ্যাট ও আয়করের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি, একটি সুষ্ঠু এবং সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ গঠিত হয় তেমন একটি সংসদের পক্ষেই সত্যিকারের দেশপ্রেম ও জনকল্যাণমুখী বাজেট অনুমোদন করা সম্ভব।

বর্তমান সংসদের সেরকম চরিত্র নেই। আমরা আশা করবো দেশে সত্যিকার জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠিত হবে। এর জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।(বাংলাট্রিবিউন)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ৩:২৪ পিএম, ০৮ জুন ২০১৬, বুধবার

এইউ

Share