হঠাৎ রাজনীতির মাঠ সরগরম হতে পারে!
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে হঠাৎ রাজনীতির মাঠ সরগরম হতে শুরু করেছে। বর্তমান কমিশনের মেয়াদ পাঁচ মাস বাকি থাকতে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি চায় শক্তিশালী নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের পাশাপাশি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি দ্রুত নির্বাচনের বিষয়ে মুখ না খুললেও নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির দাবির সঙ্গে একমত। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ মধ্যবর্তী কিংবা দ্রুত নির্বাচন কোনোটি নিয়ে এখনও কিছু ভাবছে না। তাদের সাফ কথা, নির্বাচন যথাসময়েই হবে। সেজন্য বিএনপিকে আরও আড়াই বছর অপেক্ষা করতে হবে। আর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে গেলবারের ফর্মুলায় সার্চ কমিটির মাধ্যমেই
রাজনীতির মাঠ সরগরম
আ’লীগ চায় সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশন
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি উড়িয়ে দিলেও ক্ষমতাসীনরা বলছেন, স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। অতীতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে স্বচ্ছ-গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবার মতামতের আলোকে তা গঠন করা হয়েছে। আগামীতেও একইভাবে গঠন করা হবে। তাদের বক্তব্য, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই হবে। সরকারি দল আরও মনে করে, দ্রুত নির্বাচনের দাবি না করে বিএনপির উচিত যথাসময়ে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি তার দেয়া বক্তৃতা ও সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, মধ্যবর্তী নয় নিরপেক্ষ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের অধীনে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। সেক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলেও নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শুক্রবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রতিবেদককে এমন মতামত দেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অস্তিত্ব নেই। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, বিএনপির এ দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু আগামী নির্বাচন অবশ্যই স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে দাবি করে তিনি বলেন, ইসি স্বাধীন আছে, থাকবে। এই কমিশন যেমন সার্চ কমিটির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গঠন করা হয়েছে, আগামীতেও একই পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে।
বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যথাসময়েই হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আশা করি, বিএনপি ২০১৪-এর জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যে ভুল করেছে তা আর ভবিষ্যতে করবে না। দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে।’ কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচনের নির্ধারিত সময় আসতে এখনও ২ বছর ৫ মাস বাকি আছে। তাই আমি বিএনপিকে বলব, ২ বছর ৭ মাস পার হয়েছে বাকি কটা দিনও অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া নিজেদের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করাসহ সংগঠন শক্তিশালী করুন।’
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাসদের সভাপতি এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সংবিধানের অধীনে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই সংবিধানসম্মত সময়ে নির্বাচন হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে কারও সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু জঙ্গিবাদের রাজনৈতিক পার্টনার বিএনপি নিজেকে কীভাবে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও রাজনীতিতে নিজেদের উপযুক্ত করবে তার কৈফিয়ত জনগণকে দিতে হবে। তবে জঙ্গিবাদের পার্টনারের কাছ থেকে গণতন্ত্র, নির্বাচন এবং রাজনীতির প্রশ্নে কোনো ফতোয়া শুনতে চাই না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। অতীতে যে স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসি গঠন করা হয়েছে আগামীতেও সেভাবেই একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তাতে যে কেউ মতামত দিতে পারবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে তিনি বলেন, এর পুরনো কাঠামো উচ্চ আদালতের রায়ে বাতিল হওয়ার পর এ নিয়ে নতুন কোনো রূপরেখা গত নির্বাচনের আগে বিএনপি দিতে পারেনি। বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তীকালীন একটা ব্যবস্থা সংসদে তুলে ধরেন, ওই পদ্ধতিতে সবাই অংশ নিলেও বিএনপি নেয়নি; উপরন্তু নর্বাচন বর্জন করে। তিনি বলেন, এবারও সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে যথানিয়মেই নির্বাচন হবে।
একই প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলে কিছু নেই। আদালতের রায়ে তা বাতিল হয়ে গেছে। দেশে আর এ ধরনের সরকার ফিরে আসার সুযোগও নেই। তবে আগামী নির্বাচন অবশ্যই স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে। নির্বাচন কমিশন বর্তমানে স্বাধীন, অতীতেও স্বাধীন ছিল এবং আগামীতেও স্বাধীন থাকবে। ২০১৯ সালে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে যদি এ কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তবে অতীতের মতো সামনেও সার্চ কমিটির মাধ্যমে সবার মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে এবং তা অবশ্যই স্বাধীনভাবে কাজ করবে।
হানিফ বলেন, জনগণ এ মুহূর্তে আর নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। কেননা এখনও জাতীয় নির্বাচনের প্রায় আড়াই বছর বাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কিভাবে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সাধারণ মানুষের দৃষ্টি সেদিকে বেশি। তিনি মনে করেন, বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য হল ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করা। আর জনগণও সেই লক্ষ্যে সরকারের পরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ডে শামিল। আসলে বিএনপি গত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যে ভুল করেছে, তাতে তারা ভুল-ভ্রান্তির জগতে খাবি খাচ্ছে। সাংগঠনিকভাবেও নাজুক অবস্থায় পড়েছে। তাই যখন তাদের কিছু করার বা বলার নেই তখন নতুন একটা ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ বক্তব্যও সে রকমই কিছু। তবে হানিফ মনে করেন, যেখানে জাতীয় নির্বাচনের অনেক সময় বাকি সেখানে এখনই এ নিয়ে আলোচনার কিছু নেই, জনগণও তা চায় না। নির্বাচনের ৪ থেকে ৫ মাস আগে এসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
এদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, তার দল বরাবরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপক্ষে। কেননা ১৯৯১ সালের পর থেকে যে ক’টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারই এসেছে, কেউই জাতীয় পার্টির প্রতি সুবিচার করেনি। তিনি বলেন, সামনে একটাই লক্ষ্য- জাতীয় নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করা। এ জন্য তারাও গ্রহণযোগ্য, স্বাধীন এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন চান। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন যখনই হোক জাতীয় পার্টি তাতে অংশ নেবে। সে লক্ষ্যে দল গোছানোর কাজ এবং প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। রুহুল আমিন হাওলাদার মনে করেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চেয়ে স্বাধীন এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা জরুরি।
স্বাধীন কমিশনের অধীনে দ্রুত নির্বাচন দাবি বিএনপির
দেশের সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে তা মেনে নেবে বিএনপি। একই সঙ্গে নবগঠিত এই কমিশনের অধীনেই তারা দ্রুত নির্বাচনও চাইবে। সরকার যদি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে দলটিকে আলোচনার টেবিলে আহ্বান জানায় তাতে তারা সাড়া দেবে এবং তাদের মতামত তুলে ধরবে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা যদি সবার মতামত উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে বর্তমান কমিশনের মতো ফের ‘পক্ষপাতমূলক নির্বাচন কমিশন গঠন’ করে তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি রাজপথে নামবে। এর আগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেয়া হবে। দলটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।
তারা বলেন, বিএনপির এখন একমাত্র লক্ষ্য নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনে যাওয়া। এজন্য দেশে ও বিদেশে সব ধরনের রাজনৈতিক যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু আর মাত্র পাঁচ মাস পরে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তাই গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি নিয়ে দলটি কোনো সময়ক্ষেপণ করতে চায় না। এ বিষয়ে শক্তিশালী জনমত গড়ে তুলতে চায়। বিএনপি মনে করে, শুধু ক্ষমতাসীন জোট ছাড়া প্রতিটি রাজনৈতিক দল বিএনপির মতো শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দেখতে চায়। সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির কাছে বিএনপি এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে। বিএনপির দাবি অনুযায়ী কেরিও শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
এদিকে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কখনও মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলিনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচনের পর থেকে আমরা বলে আসছি, ওই নির্বাচনটা হয়নি। সুতরাং আমরা একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তখন আমরা সরকারের কাছে আহ্বানও জানিয়েছিলাম- মধ্যবর্তী বুঝি না, আমরা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। এখনও বলছি, নির্বাচনটা হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। এই বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনও হতে হবে নিরপেক্ষ। তবে বর্তমান কমিশনের মতো যদি আরেকটি কমিশন গঠন করা হয় তাহলে তা কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। দেশের মানুষও তা মেনে নেবে না। আমরা চাই, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক। এটা আমাদের প্রস্তাব।’
এমন প্রস্তাব বা দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে যাবেন কিনা জানতে চাইলে বিএনপির এই মহাসচিব বলেন, আমরা আন্দোলনের মধ্যেই রয়েছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন এটা শুধু বিএনপির দাবি নয়; দেশের সব মানুষেরই একই দাবি। এটা দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিসহ সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পুনর্গঠন করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের সহযোগী হিসেবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও ঢেলে সাজাতে হবে। এরপরই নির্বাচন বলতে যা বোঝায় তা অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে বিএনপি এমন একটি নির্বাচন অতি দ্রুত চায়। সাধারণ জনগণেরও একই দাবি। তিনি বলেন, সরকার যদি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের আলোচনায় বসার আহ্বান জানায় তবে অবশ্যই বিএনপি তাতে সাড়া দেবে।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এছাড়া শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন থাকলে সরকার ইচ্ছা করলেও ভোটে কারচুপি কিংবা প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পাবে না। সরকারের মেয়াদ শেষ হলেও ভারতে নির্বাচন-পরবর্তী সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী স্বপদে বহাল থাকেন। কিন্তু সেখানে নির্বাচন কমিশন এতটাই শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ যে প্রধানমন্ত্রী কিংবা তার সরকারের পক্ষে নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকে না। তাই বিএনপি নেতারা ভারতের মতো শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দেখতে চান। তারা বলেন, দেশের মানুষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। জনগণের ভোট ছাড়াই একটি সরকার দিব্বি বহাল আছে। এজন্য ভোটাররা দ্রুত ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের জনপ্রতিনিধি ও সরকার গঠন করতে চায়। সেক্ষেত্রে যদি জনগণ ফের আওয়ামী লীগকে বেছে নেয় তাকে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বিএনপি এমন একটি ভোটের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে চায়। তারা মনে করে, এখন হয়তো মনে হচ্ছে প্রশাসনিক সব শক্তি সরকারের হাতে রয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো জাতীয় নির্বাচনও একই স্টাইলে হয়ে যাবে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন এক নয়। দলটি মনে করে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হলে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই মাঠে পরিস্থিতি রাতারাতি পাল্টে যাবে। জনরোসের মতো জনগণ রাজপথে নেমে আসবে। আর বিক্ষুব্ধ সেসব জনতা কার পক্ষে অবস্থান নেবে তা সময়ই বলে দেবে। সে সময় প্রশাসনের চেহারাও এমন থাকবে না।
প্রসঙ্গত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের কমিশন ২০১২ সালের ৯ ফেব্র“য়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরে আরও একজন যুক্ত হন। সংবিধান অনুযায়ী কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর। এ হিসাবে আগামী বছরের ৮ ফেব্র“য়ারি বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।যুগান্তর
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৮:০৫ পি,এম ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬,সোমবার
ইব্রাহীম জুয়েল