রাজনীতি

রাজনীতিতে নতুন মোড় : ছোট হচ্ছে ২০ দলীয় জোটের তালিকা

ছোট হয়ে আসছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিএনপি জোটের আকার? এ নিয়ে গুঞ্জন ডাল-পালা মেলতে শুরু করেছে। কেউ বলছেন ২০ দলীয় জোট ভেঙে ১৭টি, আবার কেউ বলছেন ১৮টিতে এসে ঠেকতে পারে।

বিএনপি এবং যাদের নিয়ে গুঞ্জন সেসব দলের নেতারা এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। তারা একে গুজব বলেই উড়িয়ে দিতে চাইছেন। তবে জোট নেতাদের মধ্যে এ ইস্যুতে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে।

এছ্ড়া জোটের একটি দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দেয়ার কথা বার্তাও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনের পর পরই এ ব্যাপারে ঘোষণা আসতে পারে বল বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে।

গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল থেকে যেকোনো সময় বের হয়ে যেতে পারে আবদুল লতিফ নেজামীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও একই পথ ধরতে পারে।

অন্যদিকে এলডিপি বিলুপ্ত করে ঘরে ফিরতে পারেন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে অলি আহমদের দীর্ঘ সাক্ষাতের পর গুঞ্জনে গতি পায়। তবে এলডিপিকে নিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের পর নতুন খবর আসতে পারে বলে জোটের একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে পৌরভোটে ছাড় না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ইসলামী ঐক্যজোট জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে নিয়ে জোট ছাড়তে পারে এমন খবর বেশ কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক মাঠে ঘুরছে। সবশেষ মহান বিজয় দিবসে বঙ্গভবনের সংবর্ধনায় এই দুই দলের শীর্ষ নেতাদের অংশ নেয়ার ঘটনায় গুঞ্জন বাস্তবের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন বিএনপি জোটের শরিকরা।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা চারদলীয় জোট কলেবরে বেড়ে ১৮ দলীয় জোট হয়।

বিএনপি জোটের বর্তমান শরিকরা হলো-জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), লেবার পার্টি, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাপ ভাসানী, মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, পিপলস লীগ ও ডেমোক্রেটিক লীগ।

পরে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও সাম্যবাদী দলের একাংশ এই জোটে যোগ দিলে তা ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়।

জোটের একাধিক সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া যখন দেশের বাইরে ছিলেন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদও তখন বিদেশে ছিলেন। এর মধ্যে জোটের বৈঠক হলেও তিনি ছিলেন না। দুই মাসের বেশি সময় লন্ডনে থাকার পর খালেদা জিয়া দেশে ফিরেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে অলি আহমেদের সাক্ষাৎ হয়।

জানা গেছে, সাক্ষাৎকালে এই প্রসঙ্গে তাদের কথা হয়। খালেদা জিয়া ৩০ ডিসেম্বরের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে এলডিপি চেয়ারম্যানকে আশ্বাস দেন।

যদিও এলডিপির শীর্ষ নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিমের বক্তব্য- ‘জোট ছেড়ে দেয়া, কিংবা বিএনপিতে এলডিপির যোগদানের কোনো আলামত দেখছি না।’

এলডিপি এমনটা বললেও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতাদের বক্তব্যের সুর ভিন্ন কথা বলছে। দলটির একজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অপেক্ষা করুন। জোট করার সময় কাউকে তো মুচলেকা দেয়া হয়নি।’ বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে যোগদানের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে না দেখে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান হিসেবে দেখারও আহবান জানান ওই নেতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি জোটের একটি দলের মহাসচিব বলেন, ‘লক্ষণ ভালো না। দেখেন না হঠাৎ করে আবারও ২০ দলের মহাসচিবদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জোটের সংখ্যা ২০ থাকবে না ১৭ হবে বুঝতেছি না।’

যদিও বিএনপি নেতারা এসব খবরকে গুঞ্জন বলেই উড়িয়ে দিচ্ছেন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘শরিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের জোট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। তাই কেউ যেতে চাইলে তো বাধা দেয়ার সুযোগ নেই। তবে এমন কোনো পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে হয় না। এসব হয়তো গুঞ্জন।’ (ঢাকাটাইমস)

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট : ১২:২২ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫, শনিবার

ডিএইচ

Share