সারাদেশ

রাজধানীতে দেশের প্রথম রোবট রেস্টুরেন্ট

মানুষ নয়, রোবট সরাসরি ভোক্তাদের খাবার সরবরাহ করবে। অবাক হলেও রেষ্ট্রুরেন্ট শিল্পে এটিই দেশের সর্বপ্রথম আধুনিক রোবট প্রযুক্তির ব্যবহার। রাজধানীর মিরপুর রোডে আসাদগেট প্রধান সড়কের অবস্থিত ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ড টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় ‘রোবট রেষ্ট্রুরেন্টে’ দেখা মিলবে খাবার হাতে রোবটের। বাংলাদেশের প্রথম রোবট রেস্টুরেন্ট এটি।

আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রোবট রেস্টুরেন্টটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। যাত্রা শুরু উপলক্ষে রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ এবং রোবট প্রস্তুতকারী সংস্থা যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকরা বলেন, এ ধরনের রেস্টুরেন্ট বাংলাদেশে এটিই প্রথম, যেখানে রোবটের মাধ্যমে কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করা হবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মাইল ফলক এবং নতুন দিগন্তের সূচনা করল। বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে এ রেষ্টুরেন্টটি পরিচালনা করবে বলে সম্মেলনে জানানো হয়। প্রাথমিকভাবে রোবটগুলো প্রত্যেকটি টেবিলের কাছে গিয়ে আলাদা করে খাবার পরিবেশন করবে। ভবিষ্যতে রোবটগুলো ভোক্তাদের কাছ থেকে খাবারের অর্ডারও নিবে। রোবটগুলো খাবারের অর্ডার নিতেও সক্ষম বলে জানান রোবটগুলোর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ম্যাক্স সোয়াজ। এটি করা হলে এই অত্যাধুনিক পরিসেবার নতুন আরেকটি দিক উন্মোচিত হবে বলে জানান আয়োজকরা।

প্রাথমিকভাবে দুইটি রোবট কাজ শুরু করবে রেষ্টুরেন্টটিতে। রোবট দুটির নাম ‘ওয়েটার’ এবং ‘ওয়েট্রেস’। চার্জেবল এই রোবটগুলো একনাগারে ১৮ ঘন্টা কাজ করতে সক্ষম বলে জানিয়েছে রোবট প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান। রেষ্টুরেন্টটিতে রোবটগুলো সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১২০ জন ভোক্তাকে একসঙ্গে খাবার সরবরাহ করতে সক্ষম।

শিশুদের বিনোদন ও খাবারের বিষয়টি চিন্তা করেই এ ধরণের উদ্যোগ জানিয়ে রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী বলেন, অনেক সময় দেখা যায় যে ওয়েটাররা কয়েক ঘন্টা কাজ করার পরে কান্ত হয়ে পড়েন। সেই কান্ত অবস্থায়ই তারা কাস্টমারদের খাবার সরবরাহ করতে বাধ্য হন। কিন্তু রোবট কখনোই কান্ত হবে না। তাই যখন রোবট খাবার সরবরাহ করবে তখন এটি কাস্টমারকে আরও ভাল সেবা দিতে পারবে। সেটি সকল বয়সের মানুষের জন্য অত্যন্ত রোমাঞ্চকর পরিবেশও তৈরী করবে। বিশেষ করে শিশুরা সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চিত হবে।

তিনি আরও বলেন, খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যেই রাখা হবে যাতে সকল শ্রেনীর মানুষই এই সেবা নিতে পারেন। সর্বসাধারণের সুবিধার্থে প্রাথমিক অবস্থায় রোবটগুলো দিয়ে আগামী এক মাসের জন্য শিশুদের ‘কিডমিল’ এবং দেশীয় খাবারের ‘সেট মেন্যু’ পরিবেশন করা হবে। যার মূল্য সর্বোচ্চ ৫শ টাকার বেশি হবে না।

রোবট দুটি প্রস্তুত করেছে চীনের রোবট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানী লিমিটেড। অনুষ্ঠানে রোবটগুলোর মূল্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তওে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়াজ জানান, প্রতিটি রোবটের পেছনে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ পড়েছে। তিনি আরও বলেন, রোবটগুলো সকল বয়সি ভোক্তাদের মুগ্ধ করবে বলে তাদের বিশ্বাস। রোবটগুলোর সকল কারিগরি দিকগুলো তাদের প্রতিষ্টানই দেখবেন। এসময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে রোবট ডিজিটালাইজেশনের জন্য যে কোন প্রকার সহযোগিতা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্তিত ছিলেন, রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী, কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজার তানভিরুল হক, এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়াজ এবং প্রতিষ্ঠানটির রোবট ইঞ্জিনিয়ার স্টিফেন।

নিউজ ডেস্ক:
আপডেট, বাংলাদেশ ৩:১৫ পিএম, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭ বৃহস্পতিবার।
এ.এস

Share