রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে গিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক কে তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে শ্রমিকরা। অবরুদ্ধ ছিলেন সেতুমন্ত্রী মুজিবুল হকও।
পরে মেয়র আনিসুল হক ও সেতুমন্ত্রী মুজিবুল হককে উদ্ধার করে বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে সেতুমন্ত্রী পুলিশি প্রহরায় ওই স্থান ত্যাগ করেন। কিন্তু মেয়র আনিসুল হককে ট্রাক ইউনিয়ন অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন ট্রাকশ্রমিকরা। তিন ঘণ্টা পর রবিবার বিকেল পৌনে ৫টায় তিনি অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার দুপুর ১টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তেজগাঁওয়ের ট্রাকস্ট্যান্ডে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এ সময় উত্তেজিত ট্রাকশ্রমিকরা হামলা চালায়। হামলায় সিটি করপোরেশনের বুলডোজারের কাঁচ ভেঙ্গে যায়। শুরু হয় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাপাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ছররা গুলি ছোড়ে।
এ ঘটনায় বদরুদ্দোজার (৫৫) ও জসীম উদ্দিন (৪০) নামে দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রাকিব ট্রান্সপোর্টের ম্যানেজার বদরুদ্দোজার দুই পায়ের হাঁটুর নিচে এবং ট্রাকচালক জসীম উদ্দিনের ডান কানের পেছনে ও ডান হাতে ছররা গুলি লেগেছে।
মেয়র আনিসুল হক অবরুদ্ধ অবস্থায় থেকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ভীত নই। অবৈধ ট্রাক টার্মিনালের বাইরে রাস্তায় ট্রাক রাখা হতো। এ জন্য রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হলে মানুষ আমাকে গালাগালি দিত। তাদের কয়েক দফা সময় বেঁধে দেওয়ার পরও তারা অবৈধ দখল থেকে সরে না যাওয়ায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদ অভিযানের সময় আমাকে লক্ষ করে হামলা চালানো হয়। এ হামলাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। যারা এগুলো করছেন তাদের বলছি, আমার সঙ্গে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও দেশের মানুষ রয়েছেন।’
বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদের পক্ষে। তবে এখানে বেশ কয়েকটি পক্ষ জড়িত। তাদের মধ্যে কোনো পক্ষের হয়তো কয়েকজন হামলা চালিয়েছে। তবে তা ব্যক্তিস্বর্থ হাসিলের জন্য। যারা জায়গা দখল করে আছে, তারাই এ হামলা চালিয়েছে।’
বিক্ষুব্ধ ট্রাকমালিক-শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘এ এলাকায় আজ যে সমস্যা তা হলো এ রাস্তায় ট্রাক পার্কিং না করে ভেতরের টার্মিনালে পার্কিং করতে হবে। রাস্তার ট্রাকগুলো ভেতরে ঢুকবে।’
তিনি বলেন, ‘দুই–চার-পাঁচ বছর ধরে এখানকার রেলওয়ের জায়গা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ভেতরের ওই জায়গায় গাড়ি রং করার কাজে ব্যবহার হয়। সেখানে একটি উন্নত ট্রাক টার্মিনাল গড়ে তোলা হবে।’
‘আপনাদের গাড়ি রাস্তায় নয়, ভেতরে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। আমি আপনাদের নগরপিতা, তাহলে আমরা ঠিক করলাম, এ সমস্ত জায়গায় গাড়ি রাখা যাবে না। ভেতরে গাড়ি থাকবে। আর এজন্য ভালো একটি ট্রাক টার্মিনাল বানানো হবে,’ যোগ করেন মেয়র।
তিনি বলেন, ‘আমি যেন আপনাদের ভালো রাখতে পারি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে সে দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনারাও আমার সাথে থাকবেন।’
আহত ব্যক্তির চিকিৎসায় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মেয়র।
নিউজ ডেস্ক ।। ।। ০৫:২০ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৫, রোববার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur