রমজান মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার সাথে সাথে পৃথিবীজুড়ে কিছুটা আশার আলো জেগে সস্তির আশায় বিশ্ব। বিশ্বের সকল মুসলমানের চিত্ত হয়েছে আলোময়। বিশ্ববাসীর আশা এবং চরম আকাঙ্ক্ষা রহমত মাগফেরাত ও নাজাতের পয়গান নিয়ে সূচিত এ মাহে রমজানে বিদায় হবে করোনার অভিশাপ ।
ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজান মাসে রোজা পালন ফরজ করা হয়। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনে নয়টি রমজান সিয়াম বা রোজা পালন করেছেন। কারণ রমজানের রোজা দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে ফরজ করা হয়েছিল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাদশ হিজরি বছরের রবিউল আউয়াল মাসে ওফাত লাভ করেন।
এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইসলামের আবির্ভাবের প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছরের ইতিহাসে ২০২০ সালের মতো এমন অভাবনীয় রমজান মাস আর আসেনি। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রবল আক্রমণের কারণে ধর্মীয় পণ্ডিত ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে সচেতন মানুষগণ ঘরবন্দি হয়ে সামাজিক দূরত্ব পালন করছে এবং সকল প্রকার ভিড় ও জনসমাগম এড়িয়ে চলছে। ফলে মসজিদে গমন সীমিত করা হয়েছে। রমজানের অন্যতম ও বিশেষ বৈশিষ্টপূর্ণ তারাবির নামাজও ঘরে আদায় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এপ্রতিটি মুসলিম নর-নারীর দায়িত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে নিজের ঘরে স্ব স্ব পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রমজানের যাবতীয় আমল নিজ দায়িত্বে ঘরে সম্পন্ন করার বিষয়ে। করোনার অভিশাপ থেকে মুক্তিতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা অশেষ সুযোগ দিয়েছেন ঘরগুলোকে আমলের মাধ্যমে জীবন্ত ও প্রাণবন্ত করার। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের রোজা, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, আজকারের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করার এই মহাসুযোগ কাজে লাগাতে হবে। রহমত, বরকত ও নাজাত লাভের মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের হই ও পরকালীন সফলতা অর্জনের এই মহাসুযোগ কাজে লাগানোই হবে বিচক্ষণতার কাজ।
পাশাপাশি নিজের ও সমাজের অন্যান্যদের কল্যাণ কামনায় দোয়া এবং পরিস্থিতির নির্দেশ মেনে সাধ্যমতো দান করার বিষয়টিও মনে রাখতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে একটি সফল, সার্থক, কল্যাণশীল ও আমলময় রমজান প্রতিটি মুসলমান নর-নারীর জন্য বিশেষ কাঙ্ক্ষিত বিষয়। অতএব, মাহে রমজান সহিহ-শুদ্ধতায় পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সকলের জীবনে রহমত, বরকত, নাজাতের নূরানি আলোয় উদ্ভাসিত হোক।
কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল
প্রকাশক ও সম্পাদক, চাঁদপুর টাইমস