বিশ্ব মা দিবসে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বড়ালী গ্রামের (৫ নং ওয়ার্ড) মিসেস রওশন আরা এ বছর আজাদ প্রোডাক্টস “রত্নগর্ভা মা ২০২২” পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
বিশ্ব মা দিবসে ঢাকা ক্লাব লি: এর স্যামসন এইচ চৌধুরি সেন্টারে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে এই রত্নগর্ভা মায়ের হাতে পুরুস্কার তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্পিকার ড.শিরিন শারমিন চৌধুরী (এমপি)।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী গ্রামের জনাব শরাফত আলী খান ও বদরুন্নেসা দম্পতির অষ্টম সন্তান মিসেস রওশন আরা ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ব্যক্তিজীবনে মিসেস রওশন আরা পাঁচ সন্তানের জননী।
প্রথম সন্তান: মো. রফিকুল ইসলাম, বিএসসি , এমএসসি সম্পন্ন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি পড়েছেন ভ‚গোল ও পরিবেশ বিদ্যা নিয়ে। তিন একজন পরিবেশবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে তিনি বিশ্বের অন্যতম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমাজন লজিসটিকস, জার্মানীতে কর্মরত আছেন।
দ্বিতীয় সন্তান : শামছুন্নাহার, তিনি বিএসসি, এমএসসি, এমপিএস (মাষ্টার্স অফ পুলিশ সায়েন্স) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি ৩৩ বিসিএস এর একজন কর্মকর্তা । স¤প্রতি তিনি জাতিসংঘ মিশনে বিশেষ অবদান রাখেন। তিনি বর্তমানে ৫ এপিবিএন, উত্তরা, ঢাকায় কর্মরত।
তৃতীয় সন্তান: মো. শফিকুল ইসলাম, কৃতিত্বের সাথে বিএসসি,এমএসসি সম্পন্ন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর দ্বিতীয় এমএসসি এবং পিএইচডি করেছেন মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় জার্মানি থেকে। তার পিএইচডির গবেষণার বিষয় জিনোম সিকোয়েন্সিং। তার পিএইচডি গবেষণার -অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান অপেক্ষমান রয়েছে।
বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান মাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট, জার্মানিতে সিনিয়র বিজ্ঞানী হিসাবে কর্মরত। পাশাপাশি সিইও হিসেবে আছেন ওয়াইল্ডমেন্টর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানে।
চতুর্থ সন্তান : নুরজাহান বেগম, বিএ, এমএ সম্পন্ন করার পর উদ্যোক্তা হয়েছেন। ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজ এর পরিচালক তিনি। এটি তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বিভিন্ন নারী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন।
পঞ্চম সন্তান: মো. জহিরুল ইসলাম, এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি ৩৯ তম বিসিএস স্বাস্হ্য ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। বর্তমানে প্রেষণে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে এমডি( কার্ডিওলজি) কোর্সে আছেন।
এছাড়া তিনি এফসিপিএস (মেডিসিন)এর শেষপর্বে আছেন ও এমআরসিপি( লন্ডন)এর দুইটি পর্ব সম্পন্ন করেছেন।
এছাড়া পরিবারে বড় ছেলের স্ত্রী লীন শারমিন আসমিনা বিশ্বাস রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ,ঢাকা ব্রাঞ্চের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
বড় মেয়ের জামাতা জামাল হোসেন খান ব্যাংকার। এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এ কর্মরত আছেন ঢাকায়। মেজো ছেলের স্ত্রী জান্নাতুল রাফিয়া একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট। তিনি ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয় জার্মানির একজন গবেষক।
ছোট মেয়ের জামাতা মোঃ মিজানুর রহমান স্বপন একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। ‘নাবা প্রোপার্টি’ এর পরিচালক ও কর্ণধার। এছাড়া সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছেন তিনি।
রওশন আরা নিজেও একজন রত্নগর্ভা মায়ের সন্তান। তাঁর বড় ভাই আলিফ খান তৎকালীন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন ছিলেন। পাকিস্থান আমলে ফরিদগঞ্জের প্রথম কমিশন অফিসার ছিলেন তিনি। স্বামী মো. আবুল হোসেন বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রধান হিসাবরক্ষক ছিলেন। কর্মজীবনে সৎ অফিসার হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন বাংলাদেশ রাইফেলসে। রওশন আরা – আবুল হোসেন দম্পতি সন্তানদের নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আজীবন নিরলস পরিশ্রম করেছেন। আলোকিত এই রত্নগর্ভা মায়ের সুস্বাস্থ ও দীর্ঘজীবন কামনা করি।।
প্রতিবেদক: শরীফুল ইসলাম,১৫ মে ২০২৩