সারাদেশ

‘রক্ত নদীর’ বিষয়ে বিবিসিকে যা বললেন সাঈদ খোকন

বৃষ্টির পানির সঙ্গে কোরবানির পশুর রক্ত মিশে বুধবার রাজধানীতে তৈরি হয়েছিলো রক্তের নদী। এ ছবি বুধবার প্রদর্শিত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে ও ওয়েবসাইটে।

প্রতিবছর ঢাকায় যখন ঈদের পশু জবাই হয় তখন জবাই করা পশুর রক্ত আর বর্জ্য মিলে তৈরি হয় অসহনীয় পরিবেশ। এবার তারে সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো বৃষ্টির পানির কারণে জলাবদ্ধতা। একটি দেশের রাজধানী রাস্তায় কিভাবে এমন দৃশ্য তৈরি হতে পারে সেই বিষয়ে বিবিসির সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের মেয়র সাইদ খোকনের কাছে।

এ বিষয়ে সাইদ খোকন বলেন, ‘এ দৃশ্যটি তৈরি হয়েছে ঢাকার শান্তিনগর ও চানখারপুল এলাকায়। আপনারা দেখেছেন এই সময়টাতে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়েছিলো। আর সাধারণত ঈদের নামাজের পরই কোরবানি দেয়া শুরু হয়। কোরবানির সময়য়েই বৃষ্টি হয়ে পানি জমে ওই দৃশ্য তৈরি হয়েছিলো। ঘণ্টা দুই তিনেক পর পানি নেমে গেছে। আজকে সে পরিবেশ নেই। তবে যেটা দেখেছেন সেটা বাস্তবতা।’

ঢাকার রাস্তায় রক্তের বন্যার দৃশ্য যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সেটা আপনাদের জন্য বিব্রতকর নয় কি?

এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, ‘এটা বিব্রতকর তো বটেই, দুর্ভাগ্যবশত এই ঘটনাটি ঘটেছে। আপনারা জানেন আমাদের ঢাকায় যারা বসবাস করেন তারা বাড়ির আঙিনায় বা রাস্তায় কোরবানি দিয়ে থাকেন। কারণ আমাদের পর্যাপ্ত স্লটার হাউজ নাই। তাই এরকম একটা দৃশ্য তৈরি হতেই পারে তবে এটি পার্মানেন্ট কোনো দৃশ্য নয়। গতকালের সেই ঢাকা আর আজকের ঢাকার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।’

কিন্তু ধরেন একজন পর্যটক যিনি ঢাকায় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি এরকম একটা দৃশ্য দেখার পর কি তিনি ঢাকায় আসতে আগ্রহী হবেন?

এর উত্তরে মেয়র বলেন, ‘এ দৃশ্য তার মনে উদ্বেগ সৃষ্টি করবে এটা স্বাভাবিক, তবে আমরা যেটা বলবার চেষ্টা করছি যে এটা একেবারেই সাময়িক একটা দৃশ্য। আজকে ঢাকায় হাঁটলে এমন কিছুই দেখতে পারবেন না। পরিচ্ছন্ন একটা নগরী আপনি দেখতে পাবেন।’

বিবিসির সাংবাদিক এ সময় প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা এমন একটা সিসটেম কেন ডেভলপ করতে পারছেন না যেখানে বাড়ির সামনে আর পশু জবাই হবে না।’

এর উত্তরে মেয়র বলেন, ‘পশু কোরবানির জন্য ৫০৪টি স্থান আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছি। তবে যতটুকু আশা করেছি ততটুকু সাড়া পাইনি। এ সময়টাতে ঢাকায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার পশু কোরবানি হয়। এতো ব্যাপক কোরবানিকে ব্যাবস্থাপনার অধীনে নিয়ে আসা সিটি করপোরেশনের জন্য এই মুহূর্তে একেবারেই অসম্ভব।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত বছর আমরা নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এ বছর কিছুটা বেড়েছে। আগামিতে হয়তো আরো ইমপ্রুভ (উন্নত) করবে। এখানে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বক্ষমতার একটা বিষয় আছে এবং জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততার একটা বিষয় আছে। দুটি বিষয় যখন আমরা সমন্ময় করতে পারবো তখন এই সিস্টেমটি আরো ইমপ্রুভ করবে। তবে ২ লক্ষ ৪০ হাজার পশু কোরবানিকে সিস্টেমের আওতায় আনতে অনেক সময় লাগবে।’

নিউজ এডিটর ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share