কলকাতার নির্মাতা অয়ন চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘ষড়রিপু’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী সোহানা সাবা। আগামী ৩ জুন কলকাতায় মুক্তি পাবে ‘ষড়রিপু’।
এর আগে ২৮ অথবা ২৯ মে ঢাকা ছাড়ছেন তিনি। সেখানে কলকাতায় ছবির প্রচারের অংশ নেবেন। সোহানা সাবার সাথে কথা বলে লিখেছেন মাহতাব হোসেন।
তখন আমি দৌঁড়াচ্ছি, শুধু দৌঁড়াচ্ছি। রাস্তার মানুষজন তাকিয়ে দেখছে। কেউ কেউ গাড়ি থেকে মাথা বের করে বিস্ময় নিয়ে বলছে ‘মেয়েটা পাগল নাকি?’ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটা শুটের জন্য শুধু দৌঁড়ালাম।
ষড়রিপুর শুটিং-এ এই ব্যাপারটা আমার বেশ মনে থাকবে। কেন না আমার জীবনে আমি এতো দৌঁড়াই নি। ‘ষড়রিপু’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখিই হয়েছিলেন সোহানা সাবা।
সাবা বলেন, আসলে আমি নাচেরই মেয়ে। নাচ ছাড়াও ইন্ডোর গেমস আমার পছন্দের। কিন্তু আউটডোর গেমস আমি সবসময় অ্যাভয়েড করে এসেছি।
কিন্তু এই আউটডোরে দৌঁড়ানোটা একটা কষ্টেরও ব্যাপার ছিল, কিন্তু পুরো শুটিং ইউনিট আমাকে হেল্প করেছি। বলা যায় কষ্টের মাঝেও এনজয়টা আমি করার চেষ্টা করি। ষড়রিপুতে বাংলাদেশের সোহানা সাবা ছাড়াও কলাকাতার ইন্দ্রনীল, রজতাভদত্ত, চিরঞ্জিৎ, রুদ্রনীল অভিনয় করেছে। এই ছবিতে ডিপি ছিলেন শীর্ষ রায়।
ষড়রিপুতে সোহানা কেন? একটি ফেস্টিভালে আমার সিনেমা বৃহন্নলায় আমার অভিনয় দেখে কলকাতার ডিরেক্টর অনিকেতদা আমাকে কাস্টিং করেন। তাঁর বন্ধু অয়নদাকে তিনি এই চরিত্রের জন্যে রেফার করেন। অয়নদা আমার অসংখ্য কাজ দেখেন। তারপর আমাকেই উপযুক্ত মনে করেন।
আমার সাথে নির্মাতা অয়ন চক্রবর্তীর কথা হয় ২০১৪ সালের শেষের দিকে। এরপরেই তো ২০১৫ সালের মার্চে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সবাইকে জানানো হলো। আমাকে যখন অফার দেওয়া হয় তখন আমি চিন্তা করলাম, হ্যাঁ ছবিটাতে কাজ করা যায়।
ফিল্ম নিয়ে যদি বলা হয় আমার প্ল্যান কি? তাহলে এটার উত্তর হচ্ছে আমার কোনো প্ল্যান নেই। আমার কাছে মনে হবে যে ছবিটা করা যায় সেটা আমি করবো। আমার ব্যক্তিগত জীবনে একই প্রভাব রয়েছে। তবেঁ ‘ষড়রিপু’ সোহানার জন্য মাইলস্টোন ।
কেন না দেশের সীমানার গণ্ডি পেরিয়ে অন্যদেশের একটা ছবিতে অভিনয় করা একটা ফ্যাক্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা অন্তত তাই মনে করছেন। সোহানা বলেন, আমাদের দেশের শুটিং বা কাজ ওদের কাজ একই। ওরা শুধু আমাদের চেয়ে বেশি প্রফেশনাল।
ওরা এখন একটা দৃশ্যকে জীবন্ত করে তুলতে বেশি সময় দেয়। ঐযে বললাম আমার দৌঁড়ানোর গল্পটা। ঠিক একই রকম একটা ঘটনা রয়েছে। এই দৃশ্য করতে গিয়ে আমি কতবার যে ভয়ে শিউরে উঠেছি।
সারাদিন শরীরে রক্ত নিয়ে শুয়ে আছি। শরীরে রক্ত, বাথটাবে রক্ত, দেওয়ালে, মেঝেতে ছড়িয়ে আছে রক্ত। একবার উঠে সামান্য ফ্রেশ হয়ে দুপুরে খেলাম, আবার এসে রক্ত নিয়ে শুয়ে আছি।
এই দৃশ্য করতে সারাটা দিন লেগে যায়। এমনিতেই ভায়োলেন্স আমি এড়িয়ে চলি, কিন্তু আদতে আমি ভয় পাই না। অপারেশন থিয়েটারেও আমি হেঁটে হেঁটে চলে যেতে পারি।
ষড়রিপুতে সোহানা একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সোহানা বলেন, আমি বিশ্বাস করি মানুষ যা চায়,তার সাথে সেরকমটাই ঘটে। বাংলাদেশে যে মানের সিনেমা ও ক্যারেক্টার করেছি সেরকম কিছুই করতে চাচ্ছিলাম। চমৎকার টিম, চমৎকার গল্প, চমৎকার ক্যারেক্টার, চমৎকার প্রেজেন্টেশন।
‘ষড়রিপুর’ বাইরে এসে সোহানা বলেন, আমি ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করতে চাইনা। শুধু বলবো মাত্র আমার ডিভোর্স সম্পন্ন হলো।
৮মাস ধরে আলাদাভাবে ছিলাম আমরা। এই ৮মাসের পূর্বে যথেষ্ট কারণ ছিল একসাথে থাকার। আবার যথেষ্ট কারণও আছে শত চেষ্টা করেও একসাথে না থাকতে পারার।(কালেরকন্ঠ)
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ৫:৩৩ পিএম,২৫ মে ২০১৬, মঙ্গলবার
এইউ