সৌদি যুবরাজকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে

কলঙ্কের দাগ যা লাগার তা লেগে গেছে। কিন্তু এখন নাকি সম্মান ফেরাতে মরিয়া সৌদি রাজপরিবার তাদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজের পদ থেকে উচ্চাভিলাষী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সরিয়ে দিতে চাইছে। আর তার জায়গায় অপেক্ষাকৃত কম উচ্চাভিলাষী তারই ভাই প্রিন্স খালিদকে বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

ফরাসি একটি পত্রিকার বরাত দিয়ে এমন খবর ছেপেছে ইরানি গণমাধ্যম প্রেস টিভি।

প্যারিসের একটি কূটনীতিক সূত্রের বরাত দিয়ে ফরাসি পত্রিকা লে ফিগারো বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, সৌদির আনুগত্য পরিষদ সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে গোপনে মিলিত হয়েছে।

উত্তরাধিকারের রীতি ভেঙে গত বছর মোহাম্মদ বিন সালমানকে নতুন উত্তরাধিকারী যুবরাজ হিসেবে মনোনয়ন দেয় এই পরিষদ। এখন তারা যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি দূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

লে ফিগারোকে দেয়া ব্যাখ্যায় একটি সৌদি সূত্র জানায়, যদি খালিদকে নিয়োগ দেয়া হয়, এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে সামনের বছরগুলোতে মোহাম্মদ বিন সালমানকে তার পদ ছাড়তে হবে। এভাবে ক্ষমতা বাদশাহ সালমানের পরিবারেই থাকবে।

খবরে বলা হয়েছে, দেশে ও দেশের বাইরে সমানভাবে জনপ্রিয় প্রিন্স খালিদ ধীরে ধীরে তার ভাইয়ের কাছ থেকে সব বুঝে নেবেন এবং পরে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন।

এদিকে সোমবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গেল সপ্তাহে রিয়াদ ফিরে গেছেন ২৮ বছর বয়সী প্রিন্স খালিদ। তারা আরও জানায়, প্রিন্স খালিদ যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির দূত হিসেবে ফিরছেন না। তবে কে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।

লে ফিগারো জানিয়েছে, আনুগত্য পরিষদে ইতোমধ্যে বড় শত্রু বানিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। শুধু তাই নয়, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আল সৌদি পরিবারের বহু সদস্যকে গ্রেপ্তার করে সেখানেও শত্রু বানিয়েছেন উচ্চাভিলাষী এই যুবরাজ।

আর ইয়েমেনে বোমা হামলা, কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সখ্যতার কারণে দেশের ভেতরও ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছেন ৩২ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ।

এরইমধ্যে সৌদি ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগির ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ঢোকার পর আর বের হননি। খাশোগি ও তুরস্কের দাবি তাকে কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয়েছে। আর এজন্য আঙুল উঠছে যুবরাজ সালমানের দিকেই। কারণ হত্যাকারী টিমের ১৫ সদস্যের অন্যতম একজন নাকি সবসময় যুবরাজ সালমানের সঙ্গে থাকেন। যদিও রিয়াদ খাশোগিকে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

তবে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সব পক্ষের গোয়েন্দা রিপোর্টে ভিত্তিতে মনে হচ্ছে খাশোগি আর বেঁচে নেই।

বার্তা কক্ষ

Share