১০ এপ্রিল ২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম :
ব্রিটেনে যতো সংখ্যক নারী ও শিশু যৌন ব্যবসায় লিপ্ত আছে তাদের আটশোর মতো গত বছর দেশটিতে পাচারের শিকার বলে জাতীয় অপরাধ সংস্থার এক পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে।
পাচার হওয়া নারী শিশুদের নিয়ে কাজ করছে এরকম সংস্থাগুলো বলছে, এই সংখ্যা থেকে সমস্যা কতোটা গুরুতর সেটা বোঝা যায় না এবং সাম্প্রতিক কালে পরিস্থিতি আসলে আরো খারাপ হয়েছে।
এরকমই একজন ওপ। বয়স ২৪। নাইজেরিয়া থেকে পাচার হয়েছেন ব্রিটেনে।
দশ বছর আগে, ২০০৫ সালে এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয় যিনি তাকে বিদেশে ভালো চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
তাকে বলা হয়েছিলো যে তার কাজ হবে শিশুদের ন্যানি হিসেবে, অথবা কোনো একটি কারখানায় কাজ করা।
কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন নি যে তাকে যৌন-পেশায় কাজ করতে বাধ্য করা হবে।
নৌকায় করে চারদিন লাগে তার স্পেনের মাদ্রিদে এসে পৌঁছাতে।
এসময় খুব সামান্য খাবার ও পানি ছিলো তার সাথে।
আমার অবস্থা ছিলো একজন দাসীর মতো
ওপ, যৌন কর্মী
মাদ্রিদে তাকে রাস্তায় কিছু কাজ করতে বলা হয়।
কিন্তু সেখানে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর পাচারকারীরা তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে দেন।
“আমার অবস্থা ছিলো একজন দাসীর মতো।” বলেন তিনি। কারণ যৌন ব্যবসায় লিপ্ত হতে তাকে বাধ্য করা হয়েছিলো।
একদিন তাকে যখন খাবার দাবার কিনতে বাজারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলো, সেদিন তিনি রাস্তায় একটি হারিয়ে যাওয়া মানিব্যাগ খুঁজে পেলেন।
সেখানে মানিব্যাগের মালিকের নাম ও পরিচয় লেখা ছিলো।
তখন তিনি পাচারকারীদের কিছু অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
কিন্তু যখন তিনি লন্ডনে কিংস ক্রস সেন্ট প্যানক্রাস স্টেশনে থেকে একটি ট্রেনে উঠলেন, একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা তাকে আটক করেন।
তারপর তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কারাগারে।
কারাগারে থাকা অবস্থায় পপি প্রজেক্ট নামে একটি দাতব্য সংস্থা তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসে।
পরে আদালতে সাব্যস্ত হয়ে যে তিনি আসলে মানব-পাচারের শিকার।
তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের যতো মামলা আছে সেগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
তাকে হয়তো এখন আবার নাইজেরিয়ায় ফেরত পাঠানো হতে পারে।
তবে তিনি সেখান থেকে তার আবারও পাচার হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
ওপের নিরাপত্তার জন্যে তার নাম ও কাহিনীর কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/2015