চাঁদপুর টাইমস, নিউজ। আপডেট- ১১:৫৫ অপরাহ্ন, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫, শনিবার
প্রশ্ন: আমি ১৪২২হিঃ সালে হজ্জ আদায় করেছি। তবে আমার নিকট কিছু মানুষের ঋণ আছে। কারণ হচ্ছে- আমি কিছু মানুষকে কর্জে হাসানা (ঋণ) দিয়েছিলাম; তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে, এখন এ অর্থ পরিশোধ করার দায় আমার উপর। আমি একজন শাইখকে জিজ্ঞেস করেছিলাম: আমি তো ঋণ পরিশোধ করিনি; এমতাবস্থায় হজ্জ করা জায়েয হবে কিনা? শাইখ বলেছেন: জায়েয হবে। কারণ আপনি জানেন যে, আপনি অচিরেই ঋণ পরিশোধ করে দিবেন, ইনশাআল্লাহ। একই বিষয়ে আপনাদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিপরীত তথ্য পেলাম। এমতাবস্থায় আমার হজ্জ কি কবুল হয়েছে? কারণ আমি ঋণ পরিশোধ না করে হজ্জে গেছি, পাওনাদারদের কাছ থেকে অনুমতি নেইনি। যদি আমার হজ্জ মাকবুল না হয়; তাহলে আমার করণীয় কি? আমার প্রথম হজ্জ কি ফরজ এবং দ্বিতীয় হজ্জ কি সুন্নত?
উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহ।
কোন প্রশ্নকারীর ইবাদত কবুল হওয়া সম্পর্ক প্রশ্ন করা এবং উত্তরদাতার এ সম্পর্কে উত্তর দেয়া উচিত নয়। কারণ ইবাদত কবুল হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর নিকট। বরং প্রশ্ন করতে হবে ও উত্তর দিতে হবে ইবাদত শুদ্ধ হওয়া সম্পর্কে, ইবাদতের শর্তাবলি ও রুকনগুলো পরিপূর্ণ হওয়া সম্পর্কে।
যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করল কিন্তু তার জিম্মাদারিতে অন্যদের পাওনা ঋণ রয়ে গেছে তার হজ্জ সহিহ হবে; যদি হজ্জের রুকন ও শর্তগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করা হয়। সম্পদের সাথে বা ঋণের সাথে হজ্জের শুদ্ধতার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যে ব্যক্তির ঋণ আছে সে ব্যক্তির জন্য হজ্জ না করা উত্তম। যে অর্থ সে হজ্জ আদায়ে খরচ করবে সে অর্থ ঋণ আদায়ে খরচ করা উত্তম এবং শরয়ি বিবেচনায় সে সামর্থ্যবান নয়। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির আলেমগণের ফতোয়া নিম্নরূপ:
১- হজ্জ আদায় করার জন্য যে ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করেছে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলেন: ইনশাআল্লাহ হজ্জ সহিহ। হজ্জের শুদ্ধতার উপর ঋণ গ্রহণের কোন প্রভাব নেই। শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, শাইখ আব্দুল্লাহ গাদইয়ান।[স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১১/৪২) থেকে সমাপ্ত]
২- তাঁরা বলেন:
“হজ্জ ফরজ হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে- সামর্থ্যবান হওয়া। সামর্থ্যের মধ্যে রয়েছে- আর্থিক সামর্থ্য। আর যে ব্যক্তির উপর ঋণ রয়েছে, ঋণদাতারা যদি ঋণ আদায় করার আগে হজ্জ আদায়ে বাধা দেয় তাহলে সে ব্যক্তি হজ্জ আদায় করবে না। কারণ সে সামর্থ্যবান নয়। আর যদি তারা ঋণ আদায়ে চাপ না দেয় এবং সে জানে যে, তারা সহজভাবে নিবে তাহলে তার জন্য হজ্জ আদায় করা জায়েয আছে। হতে পারে হজ্জ তার ঋণ আদায় করার জন্য কোন কল্যাণের পথ খুলে দিবে।”
মুফতিঃ শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, শাইখ আব্দুল্লাহ গাদইয়ান
[স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১১/৪২) থেকে সমাপ্ত]
সূত্রঃ ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইট